টার্গেট যখন ছোট্ট শিশুটি

0 ১১৫

স্যার আইনস্টাইন তার আকর্ষনীয় চেহারা আর চাহনী দিয়ে নিকোটিনের ন্যায় মাদকতায় আসক্ত করেছেন বহু তরণীদের।
বলা হয়ে থাকে তিনি নিজেও তরণীদের আকৃষ্ট করার এ কাজটা ভালোই রপ্ত করেছিলেন । ষোল-সতের জন সুন্দরীর পাঠ চুকিয়ে ছিলেন টিনেজ বয়সেই।
কিন্তু তার চরিত্রের এ কলংকময় অধ্যায় ঢেকে গেছে তার সৃষ্টিকর্মে।
আইনস্টাইন যেমন তার প্রেমিকা – স্ত্রীদের ক্ষনে ক্ষনে বদলাতেন তেমনি তার চিন্তার প্রখরতা তার সামনে উন্মোচিত করতো নতুন নতুন গবেষণা। তার পিতা মাতাসহ চারপাশের পরিবেশ তাকে একাজে উৎসাহ দিত। তার কিশোর মনকে ধীরে ধীরে এক পরিপক্ক বিজ্ঞানীতে পরিণত করেছে।
আমাদের তরুন প্রজন্মের অবস্থাকি? এটা এখন পুরোটাই হতাশার প্রশ্ন । যদি আরেকধাপ আগানো যায় তাহলে তার কি অবস্থা!! আমাদের কলিজার টুকরা ছোট্ট ভাইবোন, সন্তান, ভাতিজা, ভাতিজি বা হতে পারে বাসারই কোন ছোট্ট বাবুটা!
সংস্কৃতির আগ্রাসন বলে কোন যে কথা আছে সেটারও অনেক উর্ধ্বে চলে গেছে আমাদের বর্তমান সময়। টার্গেট এখন ভ্রুণ। নাম থেকে শুরু করে সবকিছুই এখন ধার করা না বলতে গেলে মাছি মারা কেরানি অবস্থা।
‘পটল’ এটা কোন ধরনের নাম হতে পারে সেটা আমর জানিকি? কিন্তু রেখে দিচ্ছি পটল কেন রাখছি? এটা এসেছে “পটল কুমার থেকে” । ঝিলিক,অর্ষি, এমা, ক্যানেচি আরোও অনেক নাম। ছোটদের আদর করে আমরা অনেক নামেই ডাকতে পারি। কিন্তু আমরা অন্যের কাছ থেকে ধার করে নয় হুবহু অন্যের শেখানো কাজ করছি।

প্রত্যেকটি সিরিয়ালে এখন প্রধান চরিত্র ছোট একটা বাচ্চা । সে তরুন নয় সে কিশোর ও নয় একদম ছোট্ট বাচ্চা। যার উর্বর মস্তিস্ককে কাজে লাগানো হচ্ছে নতুন প্রজন্মের নতুন মাদক বিনোদনের কাজে। একটা ছোট্ট বাচ্চা যখন টিভিতে দেখছে তার মতই একজন একটা জীবন সংসারের কেন্দ্রীয় চরিত্রে তখন সে শিখছে সে ভেতরে নিচ্ছে না শুধু তার পুরো মস্তিষ্কে গেথে যাচ্ছে অবচেতন মনে । বাবা মায়ের অভ্যন্তরীন বিষয়গুলোতে ওদের নিয়ে আসা হচ্ছে। ঝগড়া, রোম্যান্টিকতা; বিষাদ, বিচ্ছেদ, ভাললাগা-ভালবাসা এসব কিছুই ওদের ইনজেকশানের মত পুস করা হচ্ছে। একটা ফেমলির সমস্যাও তাকে দিয়েই সলভ হচ্ছে। কি অদ্ভুত!! বাবা মায়ের মধ্যে তৃতীয় কেউ আসছে সেটাও তাকেই সলভ করতে হচ্ছে। কিভাবে চরিত্রবিধ্বংসী পরকীয়াটা অনায়াসেই ঢুকিয়ে দিচ্ছে ওদের মন মগজে।
মেডিকেল সায়েন্স বলে মানুষ দুভাবে শেখে এক ন্যাচারাল পদ্ধতি যেটা আপনা আপনি হয় অবচেতন মনে , আর আরেকটা মানুষ ইচ্ছা করেই চর্চা করে সচেতন মনে শেখে।
আমাদের ক্ষেত্রেও সেটাই হচ্ছে বাচ্চাদের ন্যাচারালি গেথে যাচ্ছে এই জিনিস গুলো। প্লেতে পড়া বাচ্চাটি এখন কৈশোর বয়সের ম্যাচিউরিটি পেয়ে যাচ্ছে। আর প্রাইমারী হাই স্কুল এদের দেখে মনে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়েছে।
“আমার বন্ধু রাশেদ” “রানওয়ে ” এই টাইপ কিছু মুভি দেখে কিছু কিছু মানুষ খুউব খুশি হয় । তরুন প্রজন্ম ইতিহাস জানছে কাজ করছে । কিন্তু এখানে টার্গেটটা কি? এখানে অভিনয় করানো হয়েছে কিশোরদের , তাও কেন্দ্রীয় চরিত্র। যদি সত্যিকার ইতিহাস জানানো হত তাও সেটা পজিটিভ ভাবে পৌছে যেতো তরুন প্রজন্মের কাছে। এভাবে এই মস্তিষ্কগুলোকে আঙ্গুরের মত সুন্দর ফলকে চিপে পচিয়ে হুইচ্কি বিয়ারের মত মাদক তৈরী করছি সেটা হল বিনোদন তাও সুস্থ বিনোদন!
হয়তো টার্গেট নিবে ভ্রুণকেই কিভাবে রক্তমাসের শরীরের এক ডায়নামিক পুতুল বানানো যায় যারা বড় হবে এক একটা মেনিকুইন।
এক খ্রিষ্ট ধর্মযাযক বলেছিলেন -দেখতে শুনতে তারা মুসলিম হবে,কিন্তু তাদের রক্তমাংসের মুসলিম শরীরের মস্তিষ্কটা হবে খ্রিষ্টবাদের।
আমাদের অবস্থাও ওরকম দেখতে শুনতে আমাদেরই সন্তান কিন্তু মস্তিষ্কটা নিয়ে নিচ্ছে একদল মনুষ্য ঘাতক! যারা মনে করে মানুষের চোখ হবে অক্টোপাসের চোখের মত!
যা গিলে খাবে ধরার সমস্ত স্বাভাবিকতা।
আর আমরা শিক্ষিত সমাজ এক একটা মেনিকুইন হয়ে দেখছি সে অদ্ভুত দৃশ্যগুলো। সবাই ব্যস্ত কে বাসার ছোট্ট বাবুটার কথা ভাববে!!
“যে ছোটদের ভালোবাসেনা ,সে আমার অনুসারী নয়।”
(বুখারী)

Visits: 7

মন্তব্য
Loading...
//nukeluck.net/4/4139233