মানিক’র কিছু কথা ও জনচাকর

0 ১০৫

“আমিরুল মোমেনিন মানিক। সাংবাদিক, লেখক, কন্ঠশিল্পী। সৃজনশীল তরুণ। চেনা মুখ। মানিকের কাছেই জানতে চেয়েছিলাম মানিক হবার রহস্য। তিনিও মানবিক দায়বদ্ধতায় ভালোবেসে, হাসি মুখে, প্রাণ খুলে কথা বলেছেন। বলেছেন, ইন্সপায়ার করেছেন, সাহসও ধার দিয়েছেন। শিখিয়েছেন কিছু ওপেন সিক্রেট কৌশল।

তাঁর কাছ থেকেই শিখেছি , মানিক হতে হলে কুকুরও হতে হয় ! অবাক হচ্ছেন ? এর মর্মার্থ হলো সাফল্যের জন্য কুকুর হয়ে বসে থাকতে হয়। সিদ্ধান্তে অটল হতে হয়। চিন্তাকে সংকীর্ণ পরিসরে আটকে না রেখে, স্বীয় চিন্তায় টার্গেট ফিক্সড করে কাজে ঝাপিয়ে পড়তে হবে । স্বীয় আদর্শিক কনসেপ্ট ক্লিয়ার রেখে জীবন- জগতমুখী এবং ইতিহাস- ঐতিহ্য সম্পর্কে প্রচুর স্টাডি করতে হবে। এতে হারিয়ে যাবার ভয় থাকবে না। নিজেকে পরিবর্তনের মাঝেই সামাজিক পরিবর্তন লুকায়িত।

জানতে চেয়েছিলাম কিভাবে এতো কাজ করেন ? সাংবাদিকতা, গান লেখা, সুর করা, গান গাওয়া, বই লেখা । হেসে বললেন- তোমরাও পারবে, তবে মনে রাখতে হবে আমাকে কাজটা করতেই হবে। নিজের জায়গা নিজেই তৈরি করে নিতে হবে।”

এই তো সেদিন কথাগুলো বলছিলেন তিনি। তারিখটা ৬ ডিসেম্বর, ২০১৪। তখনই জানতে পেরেছি এবারের বইমেলায়ও থাকছে দুটো বই। বরাবরের মতোই বই হাতে পাবার ব্যাকুলতা ছিলো। পেয়েছি মাত্রই ঝটপট পড়ে ফেলেছি। বই দুটো হলো- জনচাকর (গদ্য) ও মুখোশপরা মুখ (সংকলিত গদ্য)।

‘জনচাকর’ বইতে মূলত র্টাগেট হলো পাবলিক সার্ভেন্টরা। পাবলিক সার্ভেন্টদের অপেশাদারিত্ব, অসততা আর অসঙ্গতি গুলো ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দিয়েছেন সমাজ-রাষ্ট্রের সাধারণের দৃশ্যপটের বাহিরের চিত্র। কিছু বাস্তব- জ্বলন্ত সত্য। ভালো, সৎ সার্ভেন্ট যে একেবারেই নেই তা বলেননি। আছে কিছু সংখ্যক। অপর্যাপ্ত। পাবলিক সার্ভেন্টরা সচেতন, দায়িত্ববান, সৎ হলেই রাষ্ট্রের চেহারা বদলে যেতে পারে।

জনচাকর বইয়ে এছাড়াও সমাজের মানুষের পুঁজিবাদী শ্রেণীবিন্যাসের ভয়ানক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে নিম্নশ্রেনীর মানুষের ঝমাট বাঁধা ক্ষোভ। মানুষের বিবেকবোধ, সচেতনতা, প্রতিবাদ করবার ভাষা প্রতিনিয়ত তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। এভাবে-

”অদ্ভুত একটা সময় পার করছি আমরা। চোখ আছে তবু অন্ধ, কান থাকতেও বধির, পা থাকলেও পঙ্গু।……………………..
সমাজের চূড়া থেকে পাদদেশ পর্যন্ত ব্যধি-জ্বরা। একজন দেশপ্রেমিক চিকিৎসক খুব জরুরী। যিনি ঘুমের ভান করে থাকা জাতিকে জাগিয়ে তুলবেন। অসঙ্গতি দেখতে দেখতে অনুভূতিগুলোও ভোঁতা হয়ে গেছে। সামগ্রিক অধ:পতনের প্রভাব পড়েছে সবখানে। তাই মাঝে মাঝে মনে হয়, যা হবার হোক গে বাপু। নিজের খেয়ে বনের মহিষ তাড়াবার দরকার কি !!” (পৃষ্ঠা ১৩, জনচাকর)

উঠে এসেছে সাংস্কৃতিক দেউলিয়াপনা আর বিকৃতির কথা। স্বপ্নবাজদের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করবার প্রেরণা । লেখার স্টাইল ফিচারধর্মী, সহজ- সরল, আকর্ষণীয়।

“মুখোশপরা মুখ” সংকলিত গদ্য। এই বইয়ে ব্লাডি জার্নালিস্ট, রাজনীতির কালো শকুন, নাটক, গল্প ও কিছু ভিন্নধর্মী ফিচার সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া লেখকের স্বীয় সাহিত্য-সাংস্কৃতিক চিন্তাধারাসহ কয়েকটি সাক্ষাৎকার।

Visits: 3

মন্তব্য
Loading...
//keewoach.net/4/4139233