ভারতীয় অশ্লীলতার সামাজিক কুপ্রভাব!!!

0 ৯০

ভালো-মন্দ সব দেশেই আছে। কোনো দেশের প্রতি নির্বিচার বিদ্বেষ সমর্থনযোগ্য নয়। বাক্য দুটি মাথায় রেখেই বলতে হচ্ছে, বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী ভারত, তোমাকে প্রিয় ভাবতে পারি না বলে দুঃখিত। হ্যা, যে ভারত অনেকের প্রিয় দল, অনেকের প্রিয় ব্রান্ড, অনেকের প্রিয় সিনেমানির্মাতা, অনেকের পছন্দের নাটক বা সিরিয়ালের জন্মদাতা- অনেকের অনেক অনেক কারণে পছন্দের, অনেকের ভক্তি ও ভালোবাসার, আমি তাকে সামান্য ভালোবাসতে পারি না।

একজন সচেতন মুসলিম হিসেবে বর্তমান ভারত অপছন্দ হওয়ার সবচে বড় কারণ সম্পর্কে বলা যাক। যে অশ্লীলতা দীর্ঘদিন পর্যন্ত হলিউড গেলাতে পারে নি মুসলিমপ্রধান দেশগুলোকে। বলিউড একাই তা পেরেছে অতি অল্প সময়ে। মধ্যপ্রাচ্যের কোন মুসলিম দেশ আছে যেখানে বলিউডের শিল্পিত অশ্লীলতা সম্মতি পায় নি। ভারত শুধু বলিউড দিয়েই অশ্লীলতা ছড়ায় নি। আজকাল তারা তাদের বাংলা সিরিয়াল ও নানা রিয়েলিটি শো দিয়েও অশ্লীলতাকে সমাজে গা সওয়া করে দিয়েছে। ঢালিউডের বাংলা নাটক-সিনেমাও কম যায় না। ভারতীয় হিন্দি-বাংলা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উপস্থাপিকাদের রুচিহীন অসভ্য পোশাক সংক্রামক ব্যধির মতো দ্রুতই ছড়িয়ে পড়েছে প্রিয় মাতৃভূমির প্রিয়তম বোনদের মধ্যে। নাচ-গানের প্রতিভা বিকাশের নামে দ্রুততর সময়ে অনুসৃত হচ্ছে নিষ্পাপ শিশুদের অশ্লীলতা শেখা ও প্রদর্শনের অনুষ্ঠান।

অশ্লীলতা বিস্তারে ভারতের সর্বশেষ অবদান উপমহাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ভার্সন টি-২০ তে চিয়ার্স গার্লদের সংযোজন।এরচে বড় বিস্ময়ের ব্যাপার, বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিও ভারতের অন্ধ অনুগমন-অনুসরণ করছে। টি-২০ বিশ্বকাপ যেখানেই আয়োজন হোক না কেন চিয়ার্স লেডি নামের বাদরমুখীদের সস্তা শরীরকলা প্রদর্শনের ব্যবস্থাও রাখতে হবে! কী অদ্ভুত কাণ্ড! মাত্র কয়েক বছরে ক্রিকেটের ব্যাট, বল আর প্যাড-গ্লাভসের মতো বাদরনর্তকীও অপরিহার্য হয়ে দাঁড়াল!

দৃঢ় নৈতিকতাসম্পন্ন ইসলামী আদর্শের যেসব ধারক-প্রচারক এসবের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বা কলম ধরেছেন, এতদিন মিডিয়া তাদের প্রতিক্রিয়াশীল বা গোঁড়া মৌলবাদী বলে রুখতে চেয়েছে। পক্ষান্তরে শিল্পচর্চা আর প্রতিভা বিকাশের নামে অশ্লীলতাকে মিডিয়া শুধু উৎসাহিতই করে নি, নিছক বস্তুগত স্বার্থের টানে নির্লজ্জ পৃষ্ঠপোষকতাও দিয়েছে। স্পন্সর খুঁজে এনে স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো আজকাল ক্লোজ আপ ওয়ানের নামে গানে, লাক্স ফটো সুন্দরি প্রতিযোগিতার নামে সুন্দরী প্রতিযোগিতায়, খুদে গানরাজ প্রতিযোগিতার নামে শিশুদের গানে মাতাল করা থেকে নিয়ে শিল্পকলার নামে শরীরকলার হেন আইটেম নেই যার আয়োজন করা হচ্ছে না।

হিন্দুস্তানের দিল্লী সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে স্বীকৃতি পেয়েছে ধর্ষণের রাজধানী হিসেবে।  হিন্দুস্তানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশেও ঘটছে অসংখ্য নারী নির্যাতনের ঘটনা। তবে দুঃখজনক সত্য হলো, হিন্দুপ্রধান ভারতের যতটুকু হুঁশ ফিরেছে মুসলিমপ্রধান বাংলাদেশের ততটুকু ফেরে নি। বাংলাদেশ কি তবে ধর্মনিরপেক্ষতায়/ধর্মহীনতায় ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে! ভারতের মিডিয়া এবং নারী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে, কিন্তু বাংলাদেশের নারী সংগঠন আর মানবাধিকার কর্মীদের যেন এখনো ঘুম ভাঙে নি।

লেখকঃ আলী হাসান তৈয়ব

 

 

Visits: 1

মন্তব্য
Loading...
//whulsaux.com/4/4139233