মিথ্যার বেসাতি

মিথ্যার বেসাতি করতে করতে
কখন যেন নিজেই জ্বলন্ত মিথ্যা হয়ে গেছি।
এখন বোঝা দায় হয়ে গেছে
“আমি” মিথ্যায় কতটা সত্য আছে?
হয়তো সত্যের কোন লেশই নেই
নাকি পুরোটাই সত্য?
উহ! কেমন যেন মাথা ঝিম মেরে ওঠে
গিজগিজে মিথ্যার চাকচিক্যে ‘মিথ্যা’ নাহয়ে বাঁচা যায়না।
মিথ্যার বেসাতি না করলে চলবো কি করে?
খাবো কি?
মিথ্যা চোখ রাঙায় তার কোলে রঙ ঢঙ না করলে
ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেবে।
আমি নিতান্তই আলাভোলা একজন,
জীবনকে খুব ভালোবাসি
আমি, “আমরা”কে নিয়ে একটু ভালো থাকার প্রচন্ড লোভ।
তাই করে যাই মিথ্যার বন্দনা।
একেবারেই যে বুঝিনা তা কিন্তু নয়?
এই ‘আমার’ হাত ধরে ধরে মিথ্যা পরিনত হচ্ছে
বিশাল মহীরুহ হয়ে একদিন আমাকেই গিলে ফেলবে
যেখানে সত্যের অনুভুতি শূন্য থেকেও শূন্যে।
সত্য আজ চিপায় পড়ে কাতরায়
সত্যকে গুম করে রাখা হয় মিথ্যার সাজানো বাক্স পটরায়,
আমার মত একজন একজনের সাহায্যে।
মিথ্যার কত ফিকির কত মনভোলানো সাজ?
একদম মস্তিষ্ক উলটে বসে যায়,
তখন মিথ্যাকে এতটা ধ্রুব মনে হয় যে
মিথ্যার আরাধোনায় নিজেকে সপে দেই।
আবার কখনো সত্যের উঁকিঝুঁকিতে নড়ে চড়ে বসি,
ঘোর কেটে যায়, স্থিরতায় ব্রতী হই সত্যের সমূদ্রে ডুব দিবো,
তাতে মরন আসে আসুক, অন্তত নিজেকে বলতে পারবো “কাপুরুষ” নই!
কিন্তু মিথ্যার আজদাহা এমনভাবে চারপাশ ছেয়ে নিয়েছে
একটু এদিক সেদিক হলেই আজদাহার প্রকান্ড গহবরে চালান হয়ে যাবো।
তাই ভীত বিহব্বল দৃষ্টি মেলে
থরো থরো পায় মিথ্যার দোকানেই ফিরে আসি,জীবনকে সাজানোর লোভে
মিথ্যার বেসাতি করি সত্যের বুকে চেপে।
মিথ্যার ছায়ার প্রসারতা এত বেশি,এতটা কমণীয়
সাহসের হোমরাচোমড়াও তপ্ততার ভয়ে মিথ্যার ছায়ায় বসে ঝিমায়,
ঝিমানোর মত্ততা এতটাই প্রগাঢ়
সত্যের চিরায়ত পোশাক খুলে নিলেও টের পাইনা।
মিথ্যার দেয়া আনন্দেই যে পেয়ে যাই বেহেস্ত
অদেখা বেহেস্তের লোভ মনে ঠায় পায়না।
করি মিথ্যার বেসাতি, মিথ্যার আর্চনা
মিথ্যায় শ্রম ঢেলে ঢেলে সত্যকে করে যাই ঝাঝরা।
তবু জানি,এবং মানি
সময় হলে সত্য দাঁড়াবে মাথা উঁচু করে।
কে আমি? কে তোমরা?
সত্য চিনে নেবে সত্যের সেনা।

Visits: 3

  • গদ্য-পদ্য
Comments (০)
Add Comment