স্মৃতির দেখা
প্রেয়সী খবর দিয়েছে বহু প্রতীক্ষার অবসান হতে চললো বলে
কাল সকালেই দেখা।
শিশিরে ভেজা ঘাসে,খালি পায়ে, আঙ্গুলের ফাঁকে আঙ্গুল
ভাঁজ করে চলার ফাঁকে সোনালী ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি আঁকা।
রাতভর জেগে আছি,হাতের পাশে আয়না,ডায়েরির নতুন পৃষ্ঠা আর সাদাস্ক্রিণে তোমার ছবি জড়িয়ে থাকা মোবাইল
প্রেয়সীর সাথে বলার জন্য কথাগুলো গুছাতে গুছাতে চোখের নিচে তাই আয়না,আর হাতের বস্তাপচা লিখা এড়াতে জীবন্ত সাদা স্ক্রিনের বায়না।
সবার সামনেই তো আমি ছিলাম তুমুল আসর জমানো নীলকান্তমণি
প্রেয়সীর সামনে গেলেই হারায়ে যায় সকল শব্দ ধ্বনি।
সকালে দেখা বহুদিন পর, বাহিরে শিশির ভেজ জানালায় পাশে সঙ্গ ভাবনায় নিরবিচ্ছিন্ন চাঁদ
বহুদিন,বহু সাধনা, ত্যাগ সংগ্রাম আর প্রতীক্ষার পর-
প্রেয়সীর প্রশ্রয়ারিত দেখা,এবারে না বলা কথা বলার মাশুল হবে সবকিছুই বাদ।
একদিকে কুয়াশা আচ্ছাদিত গদ্য পদ্যের আবেগী রজনী,
অন্যদিকে সকালে বহুযুগের সাধনার পর ধরা দেবে অবনী।
গুছিয়ে বলা কথার মালা নিয়ে তৈরী হবো নাকি প্রকৃতির এই আহ্লাদী আবেগে হারিয়ে যাবো
ভাবছি,ভাবছি, আর ভাবছি। ভাবনারা সমগ্র স্বত্ত্বা জুড়ে।
ভাবতে ভাবতে সময় পর,হচ্ছে সকাল আসছে ঘুমের আকাল
ভাবনার পাহাড় সরিয়ে এখন ঝাপসা হতে চললো চাঁদ, সামনে ভেসে উঠে প্রয়সীর মুখচ্ছবি
ভাবনাতে হৃদয় যাচ্ছে ভরে, নির্ঘুম ভাবনাতে চোখ যাচ্ছে পুড়ে।
কিছুই গুছানো হয়নি প্রেয়সীর জন্য,হয়নি রাতের আবেগময় প্রকৃতিকে দেখা হয়নি বলে ভাবনাগুলো এখন হন্য
কি করে বলব, তাকে ভালোবাসি!
কি করে বুঝাবো তার সংস্পর্শ প্রাণে জাগায় স্পন্দিত হাসি!
কি করে বলব,তার এক পলক চোখের দৃষ্টিতে আমি ঘোরচ্ছন্ন নেশাখোর!
তার ঠোঁটের উষ্ণ হাসিতে আমার হৃদয়ে দোলা দিয়ে খুলে যায় মাতাল প্রেমের জ্বালাময়ী দ্বোর
কি করে বলব, তাকে আঙ্গুলের মাঝে আঙ্গুল তৈরী সেতু ভাঙ্গতে চাইনা আর
তাকে ঘিরেই আমার জীবনের সকল সম্ভাবনা-হতাশার দুয়ার।
বলতে চাই শিশির ভেজা ঘাসে একসাথে খালি পায়ে হেটে চলার অনুভূতি
আলতো আলতো রোধের অল্প স্বল্প আঙ্গুলে ছোঁয়ার শিহরণে আটকে রাখার কি দারুণ স্মৃতি
নিজের এই ভালোবাসাতে নিজের প্রতি হচ্ছে সহানুভূতি
এত এত ভাবনার ফাঁকে প্রেয়সীর ফোন
–কোথায় তুমি? নেই কেন কোন খোঁজ?
সেই আধঘন্টা যাবৎ বসে আছি-নিচ্ছনা কোন খোঁজ!
রাগের স্বর
ভালোবাসার ভর
তুমি কি আমায় সিরিয়াসের সত্যিটা অনুভব করো কিনা ভাবছিলাম এতক্ষণ
ভেবে ভেবে ভাবনারা দিচ্ছেনা কোন সমাধানের সন্ধিক্ষণ
আসো তুমি কথা হবে,সিদ্ধান্তের পাটাতনে পাল্টে যাবে ভুবন।
রোদ উঠে গেছে,কুয়াশা উবে যাচ্ছে
তোমার নেই কোন খোঁজ
ভালোবাসাকে ভালোবাসতে না জানলে চলবো কি করে রোজ?
“চলবো কি করে রোজ?” ভাবনার চাকা আবার সচল,এবার ছুটে চলার তাড়া দেয়
নেই কোন দ্বিধা,হারাতে দেবনা প্রেয়সীর প্রেম,থমকে যাবোনা কোন নতুন ভাবনায়।
প্রেয়সী ডাকছে,অপেক্ষায় বসে আছে,স্বপ্ন গুছায় রোজ
তাই থেমে থাকার ভাবনারাও নিচ্ছে চলমান গতির খোঁজ
দেখা করার পথে-একমুঠে ঘাসফুল,আর দুটো চিঠি লিখার রঙ্গিন কাগোজ
দূরে ঐ প্রেয়সী,নদীর তীরে, কাঠনৌকার কোলাহলের বিপরীতে, আধভেজা ঘাসের উপর দাড়িয়ে
তাকে দেখেই আবারো সব, একেবারে সব যাচ্ছে হারিয়ে।
আমাকে দেখে স্মিত হাসি,আর সূর্য উঠার মত রক্তিম রাগ
ফুল,চিঠির কাগজে এগিয়ে দিতে মিশিয়ে দিলাম ভালোবাসার “ভাগ”।
চিঠিতে হবে বিচ্ছেদের স্মৃতিমাখা কটু অবলেখন
নাহয়,
নতুন সূর্যের সাথে ভালোবাসার স্বপ্নগুলোর নতুন করে কার্যসূচি লিখন
তাকে দেখেই,আমি ভুলে যাচ্ছি সব, খেই হারানোর যেন বিপ্লবী মিছিল
তবু ভালোবাসাকে নিয়ে কোন এক তীরে পৌছাতে এবার থাকবোনা কোথাও- কোন সংগ্রামের শামিল।
কি হবে পরে বলা হবে
উদ্ভূত পরিস্থিতি এখন সামলাই তবে।
Visits: 4