বাচ্চাদের আব্দার ! কিভাবে সামলাবেন??
বাচ্চাদের কাজ ই হল বিভিন্ন রকমের আবদার করা । তাদের আ্ব্দারের যেন কোন শেষ নেই ……। শুধু খেলনা, জামাকাপড় বা কোনকিছু কেনা- কাটার বিষয় ই নয় অন্য যে কোন ব্যাপারে ই বাচ্চা রা আব্দার করে থাকে । যেমন ধরুন : কোন বাচচা খাবার দাবাড়ের ব্যাপারে আব্দার করতে পারে অর্থাৎ যেটা ওর জন্য ক্ষতিকর সেই ধরনের খাবার ই বেশি করে খেতে চাইতে পারে । যে পোশাক টা ওর জন্য আরামদায়ক নয় সেই জামা টি বেশি করে পড়ার জন্য আব্দার করতে পারে । সর্দি – কাশি তার মধ্যে বেশি বেশি পানি নাড়তে চাইতে পারে । সারাদিন একটানা বসে কার্টুন দেখতে চাইতে পারে । সব ধরণের আব্দারের ক্ষেত্রেই রাগ দমন করে সন্তানকে একটু বুঝিয়ে বললেই দেখবেন আপনার সোনামণির মধ্যে অনেক পরিবর্তন চলে এসেছে…..আর যার সুফল ভোগে করবেন আপনি….।
যাই হোক , এই ধরণের হাজারো আবদারের মুখোমুখি প্রতিনিয়তই বাবা -মাকে হতে হয় । বিশেষ করে মাকে । তখন আপনি আপনার সন্তানের আবদার কতটুকু পূরণ করবেন আর কীভাবে ওকে ঐ কাজ থেকে নিবৃত্ত করবেন ? অনেক বাবা মা আছেন সন্তানের বিভিন্ন আবদারের ব্যাপারে একেবারে ই উদাসীন । সন্তানের চাওয়া পাওয়া কে একদমই আমলে নিতে চাননা । আবার কিছু বাবা মা আছেন যারা সন্তানের আবদারের ব্যাপারে অতিরিক্ত সচেতন । সন্তান মুখ দিয়ে কিছু বের করার আগেই সেটা তার সামনে হাজির করে । উচিত হল মধ্যবর্তী পর্যায় অবলম্বন করা। এক্ষেত্রে সন্তানের চাওয়া পাওয়াকে মূল্যায়ন না করলে সে হীনমন্যতায় ভুগবে তার মনটা ছোট হয়ে যাবে । অন্যদিকে যদি সন্তানের চাহিদা কে অতিরিক্ত মূল্যায়ন করা হয় তাহলে সে নিজেকে খুব বড় কিছু ভাবতে শুরু করবে তার মধ্যে ঔদ্ধত্য ভাব দেখা দিবে…দেখা যাবে ,পরবর্তী কালে…. তার কোন সিদ্ধান্ত কেউ মানছেনা এটা সে একদমই সহ্য করতে পারছে না ।
তাই সবার আগে বাবা মাকে সন্তানের সাথে বন্ধু সুলভ আচরণের মাধ্যমে সে কোন্ জিনিস বা খেলনা চায় সেটার মূল্য কেমন যদি বেশি দামি কোন খেলনা যা bear করার মতো সাধ্য আপনার নেই , তাহলে সেটা তাকে বুঝিয়ে বলুন এবং আপনার নাগালের মধ্যে যে জিনিস টি আছে সেটি তাকে কিনে দিতে দয়া করে কোন কার্পণ্য করবেন না।
যেমন : আপনার সন্তান হয়তোবা পাঁচ হাজার টাকা দামের কোন খেলনা চাইল এখন আপনি যদি তাকে বকা ঝকা শুরু করেন তাহলে সেটা তে কোন লাভ ই হবেনা বরং আপনার সন্তানের শিশু মনের উপর এটি এক ধরণের negative প্রভাব ই ফেলবে । তাই আপনি তাকে আপনার সীমাবদ্ধতার কথা বুঝিয়ে বলুন এবং তার চেয়ে কম দামের কোন খেলনা যার ঐ খেলনার সাথে মিল আছে এরকম একটি খেলনা কিনে দিন দেখবেন আপনার সন্তান একেবারে ঠান্ডা এবং পরবর্তিকালে কোন খেলনা কিনতে চাইলে এ বিষয় টি (অথাৎ দাম) সে নিজে থেকে ই মাথায় রাখবে ।
.ছোট্ট ছেলে ইশকাক। বয়স পাঁচ । তার ছোট একটি বোন আছে তার নাম ইমা। বয়স তিন বছর । তার বাবা একটি প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করে । যা বেতন পায় তা থেকে রাজধানী শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা ও অন্যান্য নগর জীবনের মৌলিক চাহিদা মেটানোর পরে অবশিষ্ট আর তেমন কিছুই থাকেনা । কিন্তু ছোট্ট ইশকাক তো আর এগুলো কিছু ই বুঝে না তার চাই অনেক রকমের খেলনা । পছন্দের জিনিস না পেলে শুরু হয় কান্না কাটি । শুধু তাই না হাতের কাছে যাই পায় তাই ছুড়ে ফেলে । এমতাবস্থায় ইশকাকের বাবা মা বেশ দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় । অবশেষে ওর বাবা মা সিদ্ধান্ত নেয় ছেলেকে সবকিছু বুঝিয়ে বলবে । ইশকাকের মা তার ছেলেকে কোলের মধ্যে নিয়ে অনেক আদর করে তাকে তার বাবার বেতনের কথা সেখান থেকে… কিভাবে প্রায় সবগুলো টাকা খরচ হয়ে যায়…..কোন কোন খাতে কিভাবে খরচ হয়ে যায়….ইত্যাদি সবকিছু বড়দের সাথে যেভাবে বলে ঠিক সেভাবেই বলে চলল….এবং সব শেষে বলল… বাবা এবার তুমিই বল….আমরা কিভাবে এত দামী খেলনা টি তোমাকে কিনে দিব…
ইশকাক অনেকক্ষণ আগেই কান্না থামিয়ে বড় বড় চোখ করে তার মায়ের কথা গুলো শুনছিল । এবার ওর মায়ের প্রশ্ন শুনে সে চুপ করে কতক্ষণ ভাবল তারপর আস্তে আস্তে বলল…. আম্মু আমি ঐ দামি খেলনাটি নিব না….. তুমি আমাকে একটি কম টাকার খেলনা কিনে দিও….
এভাবেই ইশকাক কোন কিছু চাইলে আগে যেমন জিদ করত জিনিসপত্র ছুড়ে ফেলত সেরকম আর করেনা ।দোকানে গিয়ে ও যদি কোন কিছু চায় তাহলে আগে আম্মুর কানে কানে শুনে নিবে যে, সে যে খেলনাটি চাচ্ছে সেটা কি বেশি দামের নাকি কম দামের ….। সেই ইশকাক এখন এতটাই সচেতন হয়ে গেছে যা আসলেই অবিশ্বাস্য । ইশকাকের ছোট বোন ইমা ও যদি কোন জিনিসের জন্য বায়না ধরে তাহলে সে নিজেই তাকে বুঝানো শুরু করে …. .ইশকাকের আম্মু অবাক হয়ে খেয়াল করে তার ছেলের পরিবর্তন । আর মনে মনে বলে … আসলে সন্তান দের সাথে বনধু সুলভ আচরণের কোন বিকল্প নেই । তবে হ্যাঁ আপনার সন্তানের কোন চাহিদা কে কখনো ছোট করে দেখবেন না আর আপনার সাধ্যের মধ্যে ওর চাহিদা গুলো পূরণ করার জন্য যথেষ্ট আন্তরিক হোন.. .বাচ্চাদেরকে কোন প্রতিশ্রুতি দিলে সেটা অবশ্যই পূরণ করবেন কারণ বাচ্চারা প্রতিশ্রুতি সহজে ভুলে না । ভালো থাকুক আপনার সন্তান ভালো থাকুন আপনারা ।
Visits: 17