ভাই-বোনের ভালোবাসা
এই ছবিটা যতবার দেখি,ততবারই চোখ অশ্রুসজল হয়ে উঠে।আল্লাহর সৃষ্টিগতভাবেই
ভাই-বোনের মাঝে কি অকৃত্রিম ভালোবাসা তৈরি করে দিয়েছেন।ছোট্ট বোনকে
সামান্য বিপদের মুখে কিভাবে ভাইটি আগলে রেখেছে।
অথচ দুইটি শিশুই একেবেরে নালায়েক।
আপুর বাসায় গেলে দুই ভাগ্নে-ভাগ্নীর এই রকম কান্ডগুলো দেখি।দুই ভাইবোন সারাদিন ঝগড়া,মারামারি,খেলাধূলা,হৈ-হুল্লোড় নিয়ে ব্যস্ত।
বড় ভাই যখন ছোট বোনটিকে মারে বা ব্যথা দেয়,তখন বোনটি কাঁদতে কাঁদতে এসে বলে-মামা,ভাইয়া পঁচা।আমাকে মারছে।
তার সাথে সাথে তাল মিলিয়ে বলি-হু….ভাইয়া পঁচা।তাকে আমরা কেউ আদর করবোনা।আর মজাও আনবোনা।
ভাগ্নীটি খুব খুশী।একটু পরেই দুই ভাই-বোন মারামারি ভুলে আবার খেলায় মেতে উঠে।
ভাইয়ের ক্ষেত্রেও আবার একই কাহিনী।বোনটির হাতে ভাইটি মাইর খেলে কাঁদতে থাকে।
তখন তাকেও একই রকম আশার বাণী শোনাতে হয়।
যদিও কিছুক্ষণ পর দুইজনের সমস্ত ভেদাভেদ ও মারামারি হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।
কিন্তু দুইজনের ভালোবাসা উথলে উঠে,যখন দুই ভাই-বোনের কাউকে অন্য কেউ মারে।
আমি মাঝে মাঝে ভাইটিকে তার দুষ্টুমীর জন্য ধমক দেই,
তখন ছোট বোন চোখ-মুখ লাল করে ও ক্ষিপ্ত হয়ে বলে-তুমি ভাইয়াকে বকা দিসো কেন?আমি তোমাকে মারবো।
মামাকে কয়েকটা মাইর দিয়ে সে মনের ঝাল মিটিয়ে নেয়।
একটু পরে গিয়ে আবার তার আম্মুর কাছে গিয়ে মামার নামে অভিযোগ করে আসে,মামা ভাইয়াকে বকা দিছে।
তার আম্মুও হাসতে হাসতে বলে-ঠিক আছে।মামাকে আমরা বকে দিবো।
দুই ভাই-বোন মহাখুশী।যেনো তারা তাদের প্রতিশোধ নিতে সক্ষম হয়েছে।
আবার ভাগ্নীটিকে বকা দিলে ভাইটির রিএকশন কম হয়।সে সাথে সাথে গিয়ে তার আম্মুকে গিয়ে বলে-মামা মাহজুবাকে বকা দিছে।
দুই ঝগড়াতে ভাই-বোন সারাদিন বাসা মাতিয়ে রাখে।এদের জ্বালায় শান্তিতে একটু ঘুমানোরও সুযোগ নাই।
ভাই-বোনের এই ভালোবাসা চিরন্তন।যেটি প্রাকৃতিকভাবেই মানুষের মনের মধ্যে সৃষ্টি হয়ে যায়।
জীবনে আপন বোন পাইনি।কখনো ভাই-বোন একসাথে বড় হওয়ার সুযোগ পাইনি।ভাই-বোনের এই ভালোবাসা প্রচন্ড মিস করি। যখন ছোট্ট ছোট্ট ভাই-বোনের এই ছবিগুলো ও তাদের ভালোবাসার ঘটনাগুলো দেখি,তখন মনের মধ্যে আনমনেই চিন্তা চলে আসে,আমার যদি কোন বোন থাকতো!
Visits: 104