গ্রাম্য ঘটনা আসলে খুবই উপভোগ্য! একে তো শিক্ষার অভাব। তার উপর কুসংস্কারের উপচে পড়া ভ্রান্ত আক্রমণ! হরহামেশাই যে কেউ পন্ডিত বনে যান! সেটা অবশ্য তাদের অহংকারের চেয়ে ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার মতো! কারণ তার ভুলটা ধরার মতো লোক তো হাড়িকেন জ্বালিয়ে খুজে পাওয়া যায় না! ছোট বেলার একটা গল্প এখনও মনে দাগ কেটে আছে। সম্ভবত ক্লাস ফাইভে পড়ি! হঠাৎ একদিন গ্রামে খুব হুড়াহুড়ি পড়ে গেল! পাশের বাড়ির এক দাদা হুট করে নাকি ধপাস করে পরে গেছে! গ্রাম্য কবিরাজ ডাকা হলো……..আমি নিশ্চিত ওরে জ্বিন কিংবা ভূতে ধরেছে! নয়ত এই স্বন্ধ্যায় তার আবার কি হবে! বাজারের এক ঠুনকো ডাক্তার এসে……..গম্ভীর্য মুখে উনার(দাদা) বেশি কিছু হয়নি। ২টি প্যারাসিটামল……নিমিষেই দাদা নাকি দাঁড়িয়ে উঠবেন! ততক্ষণে দাদার অবস্থার বারোটা বেজে গেছে…………..তিনি অবিরত বমি করছেন আর শরীরটা ধরধর করে কাঁপছে। সবাই ভাবছে এই বুঝি প্রাণ গেল।হঠাৎ একটি কর্কশ কন্ঠ কানে বেজে উঠল! কি করছ তোমরা! কিছুু বুঝ না! সব আকামের দল! ওরে এতক্ষণ বসিয়ে করছোটা কি?? তাড়াতাড়ি তেঁতুল আর গরুর তড়তাজা গোঁবর নিয়ে আস এবং ওটার সাথে নতুন খনন করা কুপের পানি মিশিয়ে খাইয়ে দেও। সাথে সাথে দাদা নাকি সুস্থ হয়ে উঠবেন! এটা নাকি বৈজ্ঞানিক ঔষধ!! বিট্রিশ আমলের এক বড় কবিরাজ আমাকে শিখেয়েছে! অনেকটা উলাবিবি তাড়ানো ইতিহাসের সেই কবিরাজ মশাই এর মতো! কি আজব চিকিৎসা!! অন্যদিকে গরু খুব খুশি!! অন্তত একজন হলেও তো গোঁবরটা গলাধ:করণ করছে!! তখন না বুঝলেও আজকাল খুব মায়া হয়!! সেই তেঁতুল-গোঁবর খাওয়া দাদার জন্য। বাস্তবতা হলো যদি কারো কিছু কিছু সময় পর পর মুখে ফেনা বের হয় আর শরীরে বিরতিহীন কাঁপণ থাকে এবং মাঝে মাঝে অজ্ঞান হয় সেটাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে মৃগী রোগ বলা। এটা ব্রেইনের নিউনের কোনো একটা সমস্যার জন্য হয়ে থাকে। সে জন্য এ ধরনের রোগীদের খুব দ্রুত একজন নিউরোলজিস্টের কাছে নিতে হয়……………………………………………………………….. কুসংস্কার মুক্ত সমাজ হোক আর বিজ্ঞানের জয়োধব্বনি বাজুক।
Hits: 0