স্মার্ট ওয়ান…………

শীতের শেষ সময় তাই একটু পাতলা পোশাক হলেই বা কি! তারপরও যদি ঠাণ্ডা লেগে যায় তাই মা রাতের জন্য পুরনো কাঁথা আর ক্লাস এ যাওয়ার জন্য একদম মোটা কিছিমের একটা চাদর আর সুইটার দিল। নতুন ক্যাম্পাস, অনেক নতুন বন্ধু, আর যদি কেউ…..! বিশ্ববিদ্যালয় বলে কথা! খুব ভোরেই ঘুম ভেঙ্গেছে! গ্রামে তো কেউ সকাল পর্যন্ত ঘুমায় না । রুম থেকে বের হয়ে অবাক কেউ উঠেনি! আবার বিছানায়। ক্লাস ৯ টায়। ছটফট করে করে সকালটা হল। ওমা! সবাই হাফ প্যান্ট পড়া কেন! সকালবেলা এগুলো কি দেখলাম! ভাবতে ভাবতে ক্যান্টিন এ গেল নাস্তা করতে ……। কে যেন ডাকল অন্তু, ক্লাস এ যাবি না? অন্তু মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো। ওটা ছিল কামাল ভর্তির দিন পরিচয় হয়েছিল অন্তু। (অন্তু যে গ্রাম থেকে ঢাকা শহরে এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। ছেলেটা অনেক সরল প্রকৃতির। যে কিনা অনেক স্বপ্ন নিয়ে এসেছে ঢাকা শহরে। যার চিন্তা এবং গর্ব হচ্ছে তার সততা )।
অন্তু ক্লাস এ গিয়ে তো পুরা হতভম্ব! ওমা কতো সুন্দর সুন্দর মেয়ে! সবাই সবার সাথে কথা বলছে , কিন্তু অন্তুর সাথে কেউ কথা বলছে না। সবাই অন্তুকে দেখে শুধু হাসে। এইভাবে অন্তুর কয়েকদিন কেটে গেল, কিন্তু অন্তুর সাথে কামাল ছাড়া কেউ ভাল করে কথা বলে না। একদিন ক্লাস শেষে হেঁটে আসতেছিল অন্তু। হঠাৎ চোখে পরল অনেক বন্ধুকে তাদের গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরতেছে। আবার কিছু বান্ধুবিও বয়ফ্রেন্ড নিয়ে মজা করতেছে । সামনে এগিয়ে দেখে তার বন্ধু কামালও। কিছু না বলে রুম এ গিয়ে ভাবতে লাগলো আর ক্লাসের সব মেয়েদের মাথায় এনে চিন্তা হল যে, আমিও প্রেম করবো। অবশেষে ক্লাসের সুন্দর মেয়েটাই পছন্দ হল অন্তুর। মেয়েটির নাম পলি।
তাই অন্তু ব্যাপারটা কামালের কাছে গিয়ে বলল। কামাল শুনে তো থ! তারপরও কামাল অন্তুকে আশার বানী শোনাল। বলল- হয়ে যাবে তবে, লেগে থাকতে হবে। অন্তু তখন পুরা emotinal হয়ে বলল- বন্ধু তুই একটু আমার জন্য পলিকে বল না, please। কামাল বলল- কাল হবে। তবে আমি পলিকে তোর কাছে ডেকে আনব যা বলার তুই বলিস। অন্তু বারবার কামালকে বলে- রাজী হবে তো? কামালও আশ্বাস দেয়- হবে, হবে না কেন? অন্তু অনেক কল্পনা আর স্বপ্ন দেখতে দেখতে রুম এ আসল।
অন্তুর সারা রাত ঘুম হল না। পলিকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে কখন যে ভোর হল তা বুঝতেই পারেনি অন্তু। সারারাত অন্তু ভাবতেছিল, কি বলবে পলিকে? পলিই বা কি বলবে? কোনটা পরে পলির সামনে দাঁড়াবো? ইত্যাদি। তবে অন্তুর আত্মবিশ্বাসের কমতি ছিল না।
সকাল হল। অন্তু গোসল করে তাড়াতাড়ি করে নাস্তা করল। নতুন প্যান্টশার্ট আর গায়ে চাদর পরল। মুখে সুগন্ধি ক্রিম আর শরীরে আতর দিল। মাথায় বেশি করে নারকেল তেল, পায়ে উঁচু সাইজের জুতা আর গলায় ঘামাচি পাউটার দিয়ে বের হল অন্তু।
ক্লাস এ সবার নাকে অন্তুর সুগন্ধি গুলো মিক্সড হয়ে দুর্গন্ধ হয়ে ছড়াচ্ছিল। তাই কামাল ছাড়া পাশে আর কেউ থাকল না। এদিকে অন্তু বারবার পলির দিকে তাকাচ্ছিল। ক্লাস শেষ হল। অন্তু পলিকে দাকার জন্য কামালকে বারবার বলছে। কামাল একটু বিরক্ত হয়েই পলিকে ডেকে আনল। পলিকে রেখে কামাল চলে গেল। পলি এবার অন্তুকে বলল- কি জন্য ডেকেছেন? কিছু বলবেন নাকি? অন্তু-( লজ্জা পেয়ে) না মানে……………তেমন কিছু না। পলি যেতে ধরে, কিন্তু অন্তু হঠাৎ বলে উঠল- তোমাকে আমার ভাল লেগেছে। মানে আমি তোমাকে ভালবাসি।
পলি শুনে তো থ! তারপরও পলি বলল- আপনি কি ঠিক বলেছেন? অন্তু- অবশ্যই, ঠিক বলেছি। এবার পলি বলে- অন্তু ভাই, আপনি অনেক ভাল ছেলে। খুবই সহজ-সরল, কিন্তু আমি দুঃখিত। আমার পক্ষে সম্ভব না। একথা শুনে তো অন্তুর পুরা মাথা নষ্ট হয়ে গেল। এতক্ষণে পলি চলে যায়।
এবার অন্তু মন খারাপ করে রুমে আসে। সারাদিন সে ভাবে আমি যদি ভাল তাহলে আমাকে গ্রহণ করল না কেন? যথারীতি কামাল এসে অন্তুকে জিজ্ঞেস করল- কি পলি রাজী হল? অন্তু কোন কথা না বলে কেঁদে ফেলে। কামাল বুঝতে পেরে অন্তুকে আবার চেষ্টা করতে বলল। কয়েকবার অন্তু চেষ্টা করে পারল না। এমনকি এখন পলি অন্তুকে দেখলে পাশ কাটিয়ে যায়। তাই অন্তু সিদ্ধান্ত নিল যে এখন থেকে খারাপ হতে হবে। সেই চিন্তা করে সে মোবাইল প্যান্টশার্ট পরা শুরু করল। হাতে বাস,চুল আউলা, মুখে একটু গোঁফ কানে হেডফোন, ইত্যাদির সাথে অভ্যস্থ হতে লাগলো। এমনকি সিগারেটও খাওয়া শুরু করল।
ক্লাস এ সবাই অন্তুর এমন পরিবর্তন দেখে তো অবাক! ক্লাসের সবাই অন্তুর সাথে মিশতে লাগলো। এবার অনেক মেয়ে ফ্রেন্ড হতে লাগলো অন্তুর। পলি এসব দেখে তো পুরা টেনশনে পরল যে আমি যে অন্তুকে লাইক করলাম না সেই অন্তুর আজ অনেক মেয়ে ফ্রেন্ড। এমনকি অনেক ঘনিষ্ঠ বান্ধবীও তার এখন অন্তুর সাথে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু অন্তুর মনে কোন খারাপ চিন্তা ছিল না। এসব কিছু করত পলিকে পাবার জন্যই। কিন্তু অন্তু সবার দেখা পায় পলির দেখা পায় না।
তাই অন্তু এবার মদ খাওয়া শুরু করল। গাঁজাও মাঝে মাঝে টানে। জুয়া খেলাও বাদ দেয়নি। এবার পলি অন্তুকে অনুভব করে যে ভাল ছেলেটা কিভাবে নষ্ট হল? ও তো অনেক সরল-সহজ ছিল, কিন্তু কেন এমন হল? তাই সে একদিন অন্তুর ভাল বন্ধু কামালকে জিজ্ঞেস করল- অন্তু তো এমন ছিল না। কেন মদ, গাঁজা, জুয়া এমনকি মেয়ে নিয়েও নাকি ফুর্তি করে বেড়ায়? কামাল পলির কথা শুনে কেঁদে ফেলে। বলে- তোমার জন্যই আজ অন্তুর এই অবস্থা। তুমি তাকে ভাল বলেও তাকে ভালবাসলে না। আজ দেখ, ও খারাপ হয়েছে তোমাকে পায়নি ঠিকই, কিন্তু অনেক মেয়ে পেয়েছে। অনেক বন্ধু পেয়েছে। এখন যাও তাকে ভালোবাসো। ও তো আর এখন ভাল না খুবই খারাপ………… (কেঁদে কেঁদে বলে কামাল)। সেও কেঁদে ফেলে কামালের কথা শুনে। এবার পলি বুঝতে পারে। পলি দৌড়ে যায় অন্তুর কাছে। অন্তুর কাছে গিয়ে সে কেঁদে কেঁদে ক্ষমা চাইলো। এবার অন্তুও কেঁদে ফেলে একেঅপরকে জড়িয়ে ধরে। বন্ধুরাও সবাই বুঝতে পারে। অন্তু আর পলির মিল হওয়ায় সবাই খুশি হয়।

Visits: 2

  • সাহিত্য
Comments (০)
Add Comment
  • প্রবীণ পথীক

    গল্পটায় বাস্তবতার অভাব আছে, বাস্তবে ‘প্রেম করবো বলে টার্গেট করলাম, পরের দিন প্রেম হয়ে গেলো’ এটা কি রকম? সবার দেখাদেখি প্রেম হয় নাকি?
    তারপর দেখুন- যারা আসলেই ভালো, তারা নিজেকে এতো খারাপ পর্যায়ে পারলেই নিয়ে যেতে পারে না, হতাশ হয়ত হয়ে যায়। কিন্তু আমি মনে করি না, সিগারেট-মদ- কিংবা অধিক সংখ্যক মেয়ে নিয়ে ঘুরবে।
    লেখার হাত আরো ভালো হওয়া চাই। কিঞ্চিত সমালোচনা করলাম, ভালোর আশায় 🙂

  • sohan

    Thanks vaiya…..dowa korben amar jonno…apni aktu valo kore dekhiyen j prem ta porer din hoy ni….kisu din pore hoyece.