বর্নবাদ :কোন প্রশ্নটি সঠিকও যৌক্তিক? “সে কালো নাকি সুন্দর? ” অথবা “সে কালো নাকি সাদা?

0 ৯৭

আপনি, আমি, আমরা হরহামেশাই এই কথা জিজ্ঞেস করি মেয়েটি সুন্দর নাকি কালো? /ছেলেটি সুন্দর নাকি কালো? মাথায় হাত রেখে বলুনতো ছোটবেলা থেকে এ পর্যন্ত বিপরিত শব্দের কোথাও কি পড়েছেন কালোর বিপরীত শব্দ সুন্দর? না – আপনি পড়েন নি। আপনি পড়েছেন কালোর বিপরীত সাদা। আর কুৎসিৎ এর বিপরীত সুন্দর। এটাতো সুস্পষ্ট এক বর্নবাদী প্রশ্ন করলেন আপনি? সুকৌশলে শেতাংগদের শেখানো বুলিটা আউড়ে গেলেন। যারা কৃষ্ঞাঙ্গ দের মানুষই মনে করতো না এখনো করেনা। কালোদের হাটা পথে তারা হাটতো না। কালোদের খাওয়ার স্থানে তারা খেতো না। কেও কেও হয়তোবা বলবেন জাকির সাহেব কালো দেখে নিজের পক্ষে ওকালতি করতেছেন। আরে না ভাই আমি আমার রং নিয়ে অসন্তুষ্ট নই কারন তাতে আমার হাত নেই?
বিয়ের বাজারেতো কালোরা হিজড়ার সমতূল্য!

4449983ec19d3b49d5f6c9054ed8981c

আচ্ছা কালো রংয়ের কোন কিছুই কি সুন্দর নয়? আপনার মাথার কেশ কালো, কাবা শরিফের গিলাফ কালো….. ইত্যাদি কোটি উদাহারন দেয়া যায়। থাক সেটা দেবো না। কালোদের জন্য আমাদের ভাষাও বড় বর্নবাদী। দেখুন না কিছু শব্দ ২৫ শে মার্চের কালো রাত? আরো কত কি? বর্নবাদকে উসকে দিচ্ছে আজকের দুনিয়ার মিডিয়া। ফেয়ার এন্ড লাভলির কথাতো সবাই জানেন। ফেয়ার এন্ড লাভলীতো সাদা ব্রিটিষদের পন্য যারা দাস প্রথা বা বর্নবাদকে লালন করতেন।

এখনও বাবা-মা মেয়েটার গায়ের রং চাপা বলে দুঃখবোধ করে। কিভাবে মেয়ের বিয়ে দিবেন সেটা নিয়ে ভাবিত হন। কালো মেয়েটি পড়া-লিখা কিম্বা ক্যারিয়ার এর চেয়ে বেশী চিন্তা করেন কিভাবে তার গায়ের রঙ ফরসা করা যায়। গায়ের রঙ কালো হবার জন্য হীনমন্যতায় ভুগে। তাদের এই হীনমন্যতা আরো বাড়িয়ে তুলে বিজনেস করে যায় বহুজাতিক কোম্পানী আর বিউটি পারলার গুলো। চ্যানেলে চ্যানেলে হয় সুন্দরী প্রতিযোগিতা।

ফেয়ার এন্ড লাভলী কখনো-সখনও নয়, প্রতিদিন মাখা চাই, না হলে সেটা হবে নিজের সাথে চিটিং। কারন তা না হলে রঙ ফরসা হবে না, আর রং ফরসা না হলে পুরুষ দের চোখে তোমার কোন দাম নাই। এমন কি অফিসে মিটিং এর আগে পাচ মিনিট সময় পেলেও এর ফাকে মেখে নিতে হবে ফেয়ার এন্ড লাভলী। কারন, তা না হলে মিটিং-এ যে সমস্ত পুরুষ অংশগ্রহন করবে তাদের দৃষ্টি তোমার দিকে আকৃষ্ট হবে না, তোমার বিদ্যা এবং পজিশনের গুরুত্ব যাই হোক না কেন।

কারন হে নারী, তোমাকে আমরা মা-হিসাবে কিম্বা বোন হিসাবে কিম্বা নিদেন পক্ষে একজন মানুষ হিসাবে দেখতে চাই না, কারন তা আমার দ্বায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়, নিজের লালসা কে দমন করার মত একটা কঠিন কাজের সম্মুখিন করে দেয়।

আমরা চাই এমন নারী যে প্রথম দৃষ্টিতেই হৃদয় হরণ করবে, মনে লালসার ঢেউ তুলবে, যার পাশের সীটে বসবার কাড়াকাড়ি পড়বে। যার কাপড়ের স্বল্পতা দেখে আমার মনে দুঃখবোধ নয় বরং খুশীর সৃষ্টি হবে। এই কথা আমাদের শিখাচ্ছে আমাদের অল্প-শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত পুর্ব-পুরুষরা নয়, খোদ আধুনিক যুগের বহুজাতিক কোম্পানিগুলি।

বংশ কৌলিন্য ও বর্ণবাদ বিষয়ে মহানবী (সা.) বলেন, ‘কোন অনারব ব্যক্তির ওপর কোন আরববাসীর এবং কোন কৃষ্ণাঙ্গের উপর কোন স্বেতাঙ্গের শ্রেষ্ঠত্ব নেই। শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের একমাত্র মাপকাঠি হল তাকওয়া।’ উক্ত বক্তব্যে মহানবী (সা.) বংশ কৌলিন্য বর্ণবাদ প্রথাকে স্থান দেননি।

বর্ণবাদ সমাজ শোষণের এক অন্যতম হাতিয়ার। ইসলামে বর্ণবাদের কোনো স্থান নেই। ইসলাম বর্ণবাদকে নির্মূল করে আদর্শ রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠা করে এর উদাহরণ বিশ্ববাসীর সামনে পেশ করে গেছে। তাই তো আমরা দেখতে পাই হাবশার হজরত বিলালকে (রা.) ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিনরূপে।

বর্নবাদ নিপাত যাক।

Visits: 15

মন্তব্য
Loading...
//phaitaghy.com/4/4139233