একটি ব্যাস্ততম দিন …

0 ৭০

হঠাৎ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত ৩টা। ওয়েব সাইট এর কাজ করতে করতে কখোন যে রাত পেরিয়েছে বুঝতে পারিনি। আর ঠিক এই সময় একটা চেনা ও পরিচিত ব্যাথা অনুভব করলাম। খুব ভালো করে বুঝার চেষ্টা করলাম। হ্যাঁ ঠিক সেই চেনা ও পরিচিত বাথা এটা- আমি একটুও ভুল করছিনা। যা থেকে পালিয়ে বাঁচার প্রাণপন চেষ্টা করছি –ঠিক সেটাই ঘটছে আমার সাথে। ঘুমাতে গেলাম । নাহ খুব অসহ্য লাগছে। কিছুতেই ঘুম আসছেনা। বার বার একটা কথা মনে পড়ছে। মনে হচ্ছে – ইস আমার সপ্নের ডানাকাটা পরীটাকে যদি পেতাম! তাকে নিয়ে হারিয়ে যেতাম কোন অজানার উদ্দেশ্যে। নাহ আর না। এসব ভাবনা থেকে নিজেকে বের করার দুর্নিবার চেষ্টায় চিন্তার পরিবর্তন করলাম। রাত ৪টা বেজে গেছে। ঘুম আসেনা। উফ কী অসহ্য যন্ত্রনা। পৃথিবীটা যেন খুব অসহ্য হয়ে উঠেছে। চিন্তার পরিবর্তন করে নিজেকে নিয়ে ভাবতে শুরু করলাম। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি টের পাইনি।

মোবাইলে রিং হচ্ছে … মাফি আপু’র ফোন। কলটা ধরতে ইচ্ছা হলো না। আবার চোখ বন্ধ করলাম। আবার ফোন বাংলা লিংক নাম্বার; অচেনা তাই ধরলাম না। এইবার ভাইয়া দরজায় নক করে বল্লো – দুলাল ভাইকে উঠিয়ে দিতে। দুলাল ভাইকে ডেকে দিলাম। দুলাল ভাই হচ্ছেন আমার বড় চাচার বড় ছেলে। থাকেন কুয়েতে। তার কন্যা সন্তান হয়েছে তাই দেশে ফিরেছেন। রাজশাহীতে বেড়াতে এসছেন। অবশ্য তিনি রাজশাহীতে আমাদের বাড়ী ছাড়া অন্য কোথাও অবস্থান করেন না।

যাই হোক। উপরে যেয়ে ফ্রেশ হলাম। নাস্তা না করে রেডি হলাম। এর মধ্যে মাফি আপু আবার ফোন দিলেন, ধোরলাম।

– এ্যাই তুই কী করিস? কল ধরিস না কেনো? – ওপার থেকে মাফি আপু বলল।

– এখনি উঠলাম। আমি আসছি। আমি বললাম।

– আই তাড়াতাড়ি… আপু।

– আচ্ছা। ফোন কেটে দিলাম।

মাফী আপু। কে এই মাফি আপু?

এক সময়ের রাজশাহী কলেজের ইংলিশ ডিপার্টমেন্টের কলেজ কাঁপানো মেয়ে। আমাদের রাজীব ভাইয়ের সাথে তার সম্পর্ক। রাজীব-মাফি রেয়ার কম্বিনেশন। আমার বড় ভাইয়ের থেকেও বড় রাজীব ভাই। অথচ আমাদের সাথে তিনি যেন বন্ধু’র মত মিশেন। মনের সব কথা বলা যায় তাকে। খুব ফ্রেন্ডলি। মাফি আপু আর রাজীব ভাইয়ের বিয়ে আজ প্রায় ৮ বছর হলো। এর পরও তাদের দেখলে মনে হয় তারা এখনও অবিবাহিত। তারা এখনও মাঝে মাঝে রাজশাহী কলেজে বেড়াতে যায়। তাদের দেখে সবাই মনে করে তারা অবিবাহিত এবং তারা প্রেম করছে। মজার ব্যাপার হলো তাদের একটা ৫ বছরের মেয়েও আছে। রাজীব ভাইকে আমরা মজা করে এখোনও বলি – মাফিয়া’র ডন। মাফি আপু জন্য আমরা তাকে একথা বলি। মাফি আপু’র সামনেও একথা অনেক বলেছি তারা এটাতে রাগ করেনা বরং স্নেহের সাথে আমাদের সাথে মজা করে। এই মাফি আপু কাল রাত্রে ফোন করে বলল – কী করিস? আগামী কাল সকালে কী করবি? একটু কাজ আছে …

আমি বললাম – কিছুনা। আপনার জন্য সময় আছে বলেন কি করতে হবে। কি কাজ?

–         কাল একটু কাউন্সিলরের চেম্বারে যেতে হবে। তোর ভাতিজির জন্ম নিবন্ধন করা হয়নি।

–         আচ্ছা। ঠিক আছে। সকাল ১০টায় । আপনি কল দিয়েন।

১১টার সময় হাজির হলাম রাজীব ভাইয়ের বাড়ির সামনে। মেয়ে বের হলে বললাম তোমার আম্মু কে বলো চাচ্চু এসেছে। একটু পরে বের হ্যে আসলো মাফি আপু, স্যরি মাফি ভাবী। ** লোল **। হাটতে শুরু করলাম প্রফেসর পাড়া থেকে পাওয়ার হাউজ পার হয়ে গেলাম। শাল্বাগানের রাস্তা ধরে এগুচ্ছিলাম আমরা আর গল্পো করছিলাম। মাফি আপু বলল এ্যাই আমরা ১৯ নং ওয়ার্ড এ যাবো না? আমার মনে পড়লো আমরা ভুল পথে যাচ্ছি। দুইজন-ই ঘুরে আসাম কলোনির পথ ধরলাম। একটা রিক্সা করে ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসে গেলাম। সব কাজ সেরে ফেললাম খুব তাড়াতাড়ি। রাজু ভাই থাকাতে খুব সহজেই হয়ে গেল। আমি নিশ্চিন্ত হলাম। এবার আমি আর মাফি আপু আবার আসাম কলোনী ৩ নং গলি হয়ে পাওয়ার হাউজের পথ ধরে গল্পো করতে করতে এগোতে থাকলাম। আমি আপুকে তাদের (আপু আর রাজীব ভাইয়ের) কথা জিজ্ঞেসা করলাম। আপু প্রথমে মজা করে বলতে না চাইলেও পরে সব এ বললো। মজা পেলাম। এর মধ্যে আপু বলল চল উপশহর নর্থ সাউথ স্কুলে যাবো। আমি আর আপু আবার শালবাগান থেকে রিক্সা করে উপশহর রওয়ানা হলাম।

Visits: 5

মন্তব্য
Loading...
//zaltaumi.net/4/4139233