মানুষের চাহিদার শেষ কোথায়?
১.
ছেলেটি একেবারে শূণ্য হাতে ভার্সিটিতে ভর্তি হয়।তার মাসিক খরচ জোগানোর জন্য বড় ভাইদের কাছে টিউশনির জন্য ধর্ণা দিতে হয়।এক বড় ভাইয়ের কল্যাণে ১৫০০ টাকার একটি টিউশনি পেয়ে যায়।
অবস্হার উন্নতি ঘটে।ক্যাম্পাসে এই টাকায় মোটামুটি চলে যায়া যায়।সেও দিব্যি চলে যাচ্ছিলো।কখনো আর কারো কাছে কখনো কিছু খুজতে হয়নি।
থার্ড ইয়ারে আরেক বড় ভাই আরেকটি টিউশনির ব্যবস্হা করে দেন।এটি থেকে সে তিন হাজার টাকা পেতো।এখন তার অবস্হা রাজার মত।খরচ করেও এখন টাকা জমাতে শুরু করে।
বছর শেষে দেখা যায়,সে বান্দরবান,রাঙ্গামাটি,কক্সবাজারে ঘুরতে যাচ্ছে।সাথে আবার তার গার্লফ্রেন্ডও।
এই বছর তার তিন হাজার টাকার টিউশনিটি চলে যায়।পূর্বের টিউশনির টাকা বাড়তে বাড়তে ২৫০০ হয়েছিলো।এখন সেই টাকা দিয়েই নিজেকে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
২.
বন্ধুটির চাহিদাই ছিলো,২৫/৩০ হাজার টাকা দিয়ে জব শুরু করবে।তার সেই চাহিদা পূরণ হয়।জব শুরু করে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে।তিন মাসের মাথায় বৃদ্ধি পেয়ে সেটি ৩০ হাজারে এসে দাড়ায়।
ছাত্রাবস্হায় ৪/৫ হাজার টাকা দিয়ে মাসিক খরচ চালাতো।একটা টিউশনি দিয়েই খরচের জোগান হয়ে যেতো।কিন্তু কর্মজীবনে খরচের পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
এখন কয়েকজন মিলে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকে।সে নিজেই বলে,স্যালারী ৪০ হাজার হলে নিজেই একটি ফ্ল্যাট নিয়ে থাকবো।
কিছুদিন পূর্বে তার ছোট ভাইকে ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি ল্যাপটপ কিনে দেয়।এমনকি মাঝে মাঝে ধার করে তাকে চলতে হচ্ছে।
৩.
এক সিনিয়র ভাই ৩০ হাজার করে মাসিক বেতন পেতেন।দুই বছরের মধ্যে সেটি ৫০ হাজারে চলে যায়।কিন্তু উনি কখনো উনার টাকার ব্যয়ের হিসেব ৩০ হাজারের থেকে আলাদা করতে পারেননি।সবসময় একই কথা শোনা যায়,হাতের অবস্হা ভালোনা।মাস শেষে টানাটানি চলে।৩০ হাজারেও যে মন্তব্য ছিলো,৫০ হাজারেও সেই একই মন্তব্য রয়েছে।
এর মাঝে উনি একটি দামী ক্যামেরা কিনেছেন।দামী মোবাইল কিনেছেন,সেটি হারিয়ে আবার একটি মোবাইল কিনেছেন।
৪.
অভিজ্ঞতার পাল্লা দিন দিন ভারী হচ্ছে।মানুষের চাহিদা কতটুকু,সেটি ভাবতে ভাবতে হয়রান হয়ে যাই।যিনি আজ খুব সামান্য বেতন দিয়েই খুব সহজে জীবন যাপন করছেন,সেই তিনিই অনেক বেশী বেতন পেয়ে নিজেকে সন্তুষ্টি মনে করেননা।
আল্লাহ মানুষকে এই সহজাত প্রবৃত্তি দিয়েই সৃষ্টি করেছেন।মানুষ যতই পেতে থাকুক,সেই পাওয়ার মনোবাসনা কখনো কমবেনা।বর সেটির সাথে সাথে প্রাপ্তির চাহিদা দিন দিন বাড়তেই থাকবে।
একজন একদিন বলেছিলেন-বিল গেটসের বউয়ের চাহিদাও কখনো মিটেনা।সেখানে আমাদের চাহিদা এত কমে কিভাবে মেটানো সম্ভব!!!
রাসুল (সাঃ) এর একটি হাদীস রয়েছে-মানুষকে উহুদ পরিমাণ সম্পদ দিলে সে আরো একটি উহুদ পরিমাণ সম্পদ চাইবে।শুধুমাত্র মাটি দিয়েই মানুষের উদর পূর্ণ করা সম্ভব।
Visits: 1