বেছে খেলেন তো হেরে গেলেন
১.
একজন ৩০ সপ্তাহের প্রেগন্যান্ট মহিলা গতকাল এসেছিল। আল্ট্রা করতে মূলত বাচ্চা ছেলে না মেয়ে দেখতে 😮
বললাম আপনার শরীর এত ফ্যাকাশে কেন?
স্যার মাঝে মাঝে মাথাও ঘোরে।
দেখলাম severe anaemia
কেন আপনি প্রেগন্যান্ট হওয়ার পর সরকারী আয়রন ফলিক এসিড এসব খান নি?
না স্যার।
কেন?
হোমিও খাচ্ছি তো তাই! যদি এলোপ্যাথি হোমিওপ্যাথি দুই টা একসাথে কোন ক্ষতি করে?
বললাম কিন্তু একটু বেশি করে খেলেই তো হত। তখন এতটা খারাপ হত না।
স্যার বাছি খাইছি যে!
কি বেছে খেলেন?
স্যার গরু কবুতর হাসের মাংশ, পুঁটি মাছ, করলা, রুই কাতলা মাছ সহ আরো অনেক কিছু বাছতে হয় নাহলে অনেকেরই সমস্যা হইছে বাচ্চা জন্মের সময় 😮 বেশী রক্ত পড়ে কত মা মারা যায় :p আমাদের দাই দেখছে (অথচ ঘটনা পুরো উল্টো!) ।
২
স্বপ্না রাণী। বাচ্চা সিজারে হওয়ার কিছুদিন পর ড্রেসিং করতে গিয়ে দেখি পুঁজ আসছে। কি অবস্থা। এমন তো হওয়ার কথা না?
বললাম ঔষধ ঠিকমত খেয়েছেন?
হ্যাঁ
তাহলে এ অবস্থা কেন?
স্যার ৫ দিন থেকে খালি লবন আর জিরার গুড়ো দিয়ে ভাত খেয়েও যদি এ অবস্থা হয় আর কি করব স্যার? 😮
দীর্ঘশ্বাস ফেলে তার শ্বাশুড়ির দিকে তাকালাম। বললাম আপনাকে এত করে বুঝালাম সব খাওয়াতে হবে কিন্তু শুনলেন না তাই না?
বলল স্যার দুধ ডিম মাংশ খাওয়ালে যদি কাঁটা যায়গা পাকে?
বললাম এখন যে না খেয়ে পাকলো?
বুড়ি দেখি মুখ ঘুড়ায়ে গজর গজর করছে :p
হিসেব পুরো উল্টো হওয়ার কথা ছিল। যেহেতু মাছ মাংশ ডিম এ প্রচুর প্রোটিন থাকে তাই এগুলো কাঁটা ছেড়ার পর জীবানুর ইনফেকশন তথা রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কিন্তু এক শ্রেনীর চিকিৎসা ব্যবস্থার কারনে মানুষের বদ্ধমূল ধারনা হয়ে গেছে এগুলো ক্ষতিকর! আমরা এভাবে বেছে খাওয়াতে গিয়ে কতজনের অসহায় শরীরকে সাম্রাজ্যবাদী জীবানুর সামনে ছেড়ে দিচ্ছি তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। শুধু একটা কথা বলি বেছে খেলেন তো হেরে গেলেন বেছে খেলেন তো মরলেন 😮
(এই সিরিজ লেখা শুরু করেছি মানুষের সচেতনতার জন্য মেডিকেলীয় রেফারেন্সের জন্য নয়। সিরিজের পঞ্চদশতম লেখা। টপিক্সঃ বেছে খাওয়া এবং ইনফেকশন )
Visits: 0