হুমায়ুন আহমেদরা ও অামরা????

0 ৮২
১.
ছোটসময় থেকেই হুমায়ুন আহমেদ,জাফর ইকবাল,হুমায়ুন আজাদ.ইমদাদুল হক মিলনদের নাম শুনতাম।অন্যদের সুবাদে দু-একটা বই পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিলো।সম্ভবত হুমায়ুন আহমেদের হিমু সংক্রান্ত একটা বই পড়েছিলাম।জাফর ইকবালের বেশ কয়েকটা সাইন্স ফিকশন পড়েছিলাম।আজাদ আর মিলনের হার্ডকপি বই পড়ার সুযোগ পাইনি।তবে ইন্টারনেটের যুগে এসে কিছু বই পেয়েছি।মিলনের বই শুরু করে আর শেষ করতে পারিনি।অার আজাদের বই শুরু করার সৌভাগ্যই হয়নি।
২.
কয়েকদিন আগে একজন জিজ্ঞেস করছিলেন-হুমায়ুন আহমেদের বই পছন্দ করি কিনা?
জবাবে বলছিলাম-একটা বই পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিলো।আর যতগুলো বই শুরু করেছিলাম,সবগুলো পাগল-ছাগলের লেখা মনে করে আর পড়িনি।
৩.
জুমার পূর্বে বইমেলাতে কয়েকজনকে নিয়ে ঘুরছিলাম।ইসলামিক,নন ইসলামিক সব স্টলগুলো ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম।বেশ কয়েকটা স্টলে জাফর ইকবাল,হুমায়ুন আহমেদ,আনিছুল হকের বইয়ের বিজ্ঞাপন দেওয়া।দেখছিলাম,ঐগুলোতে প্রচন্ড ভীড়।লোকজনের ভীড়ে বইয়ের নাগাল পাওয়া মুশকিল।
কাছে না গিয়েই পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলাম।সাথের উনাদের বললাম-এইসব লেখকদের যত বই বইমেলাতে বিক্রি হয়,তার অর্ধেক বইও ইসলামপন্হীরা বিক্রি করতে পারেনা।আর এর জন্য দায়ী কারা জানেন?
আমাদের মত ব্যক্তিরা….অামরা আদর্শগতভাবে এদের বিরোধী।কিন্তু এদের বইই আমরা সবচেয়ে বেশী কিনি।
৪.
ছোট ভাই ভার্সিটির এক প্রকাশকের বইয়ের কিছু কাজ করে দিচ্ছিলো।বইয়ের রিভিউ হিসেবে একটা বই দেখিয়ে বলছিলো-দেখেন তো ভাইজান,বইটাতে কোন খুঁত খুজে পান কিনা?
-লেখকের নাম একপাশে চলে আসছে কেন?
-প্রচ্ছদেই ভুল করছে।একপেশে ভাবে ছাপিয়ে ফেলেছে।
জিজ্ঞেস করলাম-কতগুলো বই ছাপাবে?
-তিনশত এর মত।
-তোমরা তিনশত বের করে বিক্রি করতে পারলেই তিনবার আলহামদুলিল্লাহ পড়ো।অথচ জাফর ইকবাল,হুমায়ুন আহমেদ,আনিছুল হকদের ১০-১২ হাজার বই একবারেই বিক্রি হয়ে যায়।
-জানেন ভাইজান,আমরা যেখান থেকে বই ছাপাচ্ছি,সেখানে আনিছুল হকের ১৫০০ বই ছাপাতে দিয়েছে।এজন্য আমাদের বই ছাপাতে রাজী হচ্ছিলোনা।পরে বলেছে,আপনাদেরটা একটু পরে করে দিচ্ছি।
৫.
আমার মেহমানের সুবাদে আমার হলের টেবিলে হুমায়ুন আহমেদের একটি বই দেখতে পেলাম।বইয়ের নাম দেখার সুযোগ পাইনি।ওকে জিজ্ঞেস করলাম-তুমি হুমায়ুন আহমেদের বই পড়ো?
-কিছু কিছু পড়ি।
-কি মজা পাও?
-কেন জানি,উনার লেখা ভালো লাগে।
৬.
ওয়াজ মাহফিলে হুজুর সাহেব নাস্তিক্যবাদ সম্পর্কে লম্বা ওয়াজ করলেন।নাস্তিক্যবাদের ধারক বাহক হিসেবে একদল মানুষের নাম উল্লেখ করে তরুণ প্রজন্মকে হুশিয়ার করে দিলেন।তরুণ প্রজন্মও হুজুরের কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে তাদের থেকে মুক্ত থাকার অঙ্গীকার করলো।
ওয়াজ শেষে বাসায় ফিরতে ফিরতে একজন আরেকজনকে বলছে-আচ্ছা দোস্ত!তুই কি জাফর ইকবালের কোন বই কিনেছিস?
-হুমি…কিনেছি।
-তোর পড়া শেষ হলে আমাকে দিস তো।
-না…তোকে দিবোনা।তুই কোনসময় বই কিনিসনা।
-দ্যাখ দোস!এরপরে জাফর ইকবালের বই কিনলে তোকে দিবোনে….
৭.
আমরা ওদের এত্তো বিরোধিতা করি,কিন্তু আমরাই ওদেরকে সবচেয়ে বেশী প্রমোট করি।নাস্তিক্যবাদ বা ইসলামবিরোধীতার জন্য তাদের গালিগালাজ করছি,আবার গালিগালাজ শেষে তাদের বই কিনে পড়ে তাদের লেখারই গুণগান করছি।
অথচ আমাদের এমনটি হওয়ার কথা ছিলোনা।
আমরা আমাদের পন্হীয় লেখকদের বই কিনে পড়তে পারি।প্রয়োজনে আমাদের ঘনিষ্ঠ কাউকে কিছু বই উপহারও দিতে পারি।বিরোধী মতকে পরিহার করে নিজেদের পক্ষের লেখকদের প্রমোট করাতে পারি।
বেশী করে বই কিনুন,পড়ুন আর অন্যদের উপহার দিন।

Visits: 6

মন্তব্য
Loading...
//glaikrolsoa.com/4/4139233