কুফুর সহজ বিকৃতি

0 ৮২

১.
অর্ধ জাহানের খলিফা উমর বিন খাত্তাব (রাঃ) রাতের অন্ধকারে মদীনার রাস্তায় হাটছেন।উদ্দেশ্য,জনগনের দুঃখ-কষ্ট স্বচক্ষে দেখা।হাটতে হাটতে একটি বাড়ীর পাশে এসে থামলেন।শুনতে পেলেন মা-মেয়ে কথা বলছে।মা মেয়েকে উদ্দেশ্য করে বলছে-রাত থাকতে থাকতেই দুধে পানি মিশিয়ে ফেলো।দিন হলে পানি মেশানো যাবেনা।
মেয়ে মাকে বলছে-কিন্তু খলিফা দুধে পানি মেশাতে নিষেধ করছেন।
মা বললেন-এত রাতে কি খলিফা দেখছেন,রাতে কারা কারা দুধে পানি মেশাচ্ছে?পানি না মেশালে দুধের দাম কম হবে।
মেয়ে বলছে-কিন্তু খলিফা এটা না দেখলেও আল্লাহ তো এটা দেখছেন।তিনি তো আমাদেরকে শাস্তি দিবেন।
পরদিন খলিফা মেয়েটিকে দরবারে ডাকলেন।উনার ছেলেদের একজনকে বললেন,মেয়েটিকে বিয়ে করে নেওয়ার জন্য।প্রখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) মেয়েটিকে বিয়ে করে নিলেন।
২.
হযরত সা’দ সালমী (রাঃ) বিয়ে করবেন।তিনি একজন আফ্রিকান কালো মানুষ।রাসুল (সাঃ) এর কাছে এসে বললেন-হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ),আমি বিয়ে করতে চাই,কিন্তু আমার মত কালো মানুষের সাথে কেউ তার মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজী নয়।
রাসুল (সাঃ) তৎকালীন সমাজের অন্যতম ধনী ব্যক্তি আমেরের ঠিকানা দিয়ে বললেন-তুমি আমেরকে বলবে,তোমার সাথে তার মেয়ের বিয়ে দিতে।
সা’দ (রাঃ)আমের (রাঃ) এর সাথে দেখা করলেন।তাকে বিয়ের কথা বললেন।কিন্তু তিনি বিয়ে দিতে রাজী হলেননা।
সা’দ (রাঃ) হতাশ হয়ে ফিরে যাওয়ার জন্য দাড়ালেন।হযরত আমেরের মেয়ে আড়াল থেকে তাদের কথা শুনছিলেন।তিনি সা’দকে ডাক দিয়ে বললেন-আপনাকে কি আল্লাহর রাসুল (সাঃ) পাঠিয়েছেন?
সা’দ বললেন-হ্যা।
আমেরের মেয়ে বললেন-এটা যদি আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এর সিদ্ধান্ত হয়,তাহলে আমি এক্ষুণি বিয়ে করতে রাজী আছি।
হযরত আমের (রাঃ) রাসুল (সাঃ) কথা শুনে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফেললেন।ঐদিনই তিনি তার রুপসী কন্যার সাথে সা’দ সালমী (রাঃ) এর বিয়ে দিয়ে দিলেন।
৩.
রাসুল (সাঃ) কুফুর জন্য চারটি নিয়মের কথা বলে দিয়ে গেছেন।কিন্তু রাসুল (সাঃ) বা তার সাহাবীরা খুব কমই এই কুফুর নিয়মগুলো তাদের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করেছেন।তাদের কাছে একমাত্র দ্বীনদারিতা ছাড়া আর কোন শর্ত খাটতোনা।উনারা রুপ,বংশ দেখে কখনো বিয়ের প্রতি আকৃষ্ট হননি।
রাসুল (সাঃ) সবার জন্য ইসলামকে সহজ করার জন্য কুফুর কথা বলেছেন।কারণ,খুব কম মানুষই তাদের মানবিক দুর্বলতাকে কাটিয়ে উঠে সরাসরি দ্বীনের পথে অগ্রসর হতে পারে।
আমরা পুজিবাদী,সমাজতান্ত্রিক,গণতান্ত্রিক ইসলামের আড়ালে এগুলোর ব্যাখ্যাকে অনেকটা পরিবর্তন করে নিই।মুখে মুখে দ্বীনদারিতার কথা বললেও মনে একটা সুপ্ত আকাংখা রাখি,অন্তত সবগুলো বৈশিষ্ট্যই মেয়ের মধ্যে থাকুক।
অনেক সময় এমনও হয়,শুধু দ্বীনদারিতায় তাকওয়াবান পাত্ররা মেয়ের দিকে আকৃষ্ট হননা।মেয়ের পরিবার,অর্থ,বংশের দিকেও দৃষ্টি দিয়ে পাত্রী খোজার চেষ্টা করেন।
সর্বশেষ কুফুর চারটি বৈশিষ্ট্যের কথা বলে উনি উনার দ্বীনদারিতাকে জায়েজের চেষ্টা করেন।
কিন্তু বক্তৃতা,বিবৃতিতে সাহাবীদের অনুসারিত পথকে রুপকথার গল্প হিসেবেই উপস্হাপন করা হয়।

Visits: 2

মন্তব্য
Loading...
//meenetiy.com/4/4139233