স্ত্রীর অ্যালবাম দেখে ফটোগ্রাফারের কাছে স্বামীর চিঠি-

0 ১২৩

যুক্তরাষ্টের জনৈক টেক্সাস নারী নিজের বৈবাহিক জীবনে ভিন্ন স্বাদ আনার জন্য এক মহিলা ফটোগ্রাফার (নাম- ভিক্টোরিয়া হালটন)কে দিয়ে নিজের কিছু উত্তেজিত, লাস্যময়ী ও ত্রুটিমুক্ত ছবি তুলেন। এবং সেগুলো নিজের স্বামীকে দেখানোর জন্য একটা ফটো-অ্যালবাম তৈরি করেন। তিনি ফটোগ্রাফারকে ছবিটি এমনভাবে এডিট করতে বলেন যাতে উনার চেহারার যাবতীয় মেসতার দাগসহ সকল অসম্পূর্ণতা মুছে যায়।
ফটোগ্রাফার তার ছবিগুলো তুলে অ্যালবাম করে দিলো। সেই অ্যালবামের ছবিগুলো দেখে তার স্বামী নিজে সেই ফটোগ্রাফারকে যে চিঠিটি লিখেছেন; সেটা হলো-
” হাই ভিক্টোরিয়া! আমি (ওমুকের) স্বামী। সম্প্রতি আমার স্ত্রীর ছবি সম্বলিত একটা অ্যালবাম আমার কাছে এসে পৌঁছেছে। সেই ছবিগুলো তুমি তুলে দিয়েছো বলে তোমাকে লিখছি। তুমি এটা ভেবো না যে, আমি তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট; মূলত আমার চিন্তার কিছু বিষয়গুলো তোমার সাথে শেয়ার করতে চাচ্ছি।
আমাদের যখন ১৮ বছর বয়স সেই তখন থেকে আমি ও আমার স্ত্রী একসাথে বসবাস করে আসছি। আমাদের দুইটি সুন্দর সন্তানও রয়েছে। এ যাবত আমাদের জীবনে অনেক উত্থান-পতন ঘটেছে…। আমি জানি, আমার স্ত্রী তার এই ছবিগুলো তৈরি করিয়েছে- আমাদের বৈবাহিক জীবনে কিছুটা পরিবর্তন আনার জন্য, আমার মনটাকে উদ্বেলিত করার জন্য। মাঝে মাঝে সে আমাকে অভিযোগ করে বলে- যে, আমি নাকি তাকে আগের মত আকর্ষণীয় মনে করি না এবং সে আমাকে দোষারোপ করবে না যদি আমি কখনো তার চেয়ে কমবয়সী মেয়েকে খুঁজে পাই।
যখন তার দেয়া অ্যালবাম আমি খুললাম তখন আমার মন ভেংগে গেছে। এই ছবিগুলো… হ্যা অনেক সুন্দর এবং নিঃসন্দেহে তুমি একজন প্রতিভাবান ফটোগ্রাফার। কিন্তু সে ছবির মেয়েটা আমার স্ত্রী ছিলো না। তুমি তার প্রত্যেক ছবি থেকে তার চেহারার সামান্য দাগটুকুও এডিট করে তুলে দিয়েছো। আর আমি এও জানি এমনটি করতে আমার স্ত্রী তোমাকে বলেছে। তবে জানো! এডিটের মাধ্যমে ছবি থেকে অনেক কিছুই উঠে গেছে- যেগুলো দিয়েই মূলত আমাদের সংসার তৈরি হয়েছিলো।
যখন তুমি তার চেহারার ভাজ পরা দাগগুলো এডিট করছিলে, তখন তুমি আমার সন্তানদের অতীত স্মৃতিগুলোই যেনো মুছে দিচ্ছিলে। যখন তুমি তার বলি রেখাগুলো তুলছিলে তখন তুমি যেনো আমাদের সুখ- দুঃখের দুই যুগের জীবনটাই যেনো মুছে ফেলছিলে। তুমি তার চামড়ার স্থুলতা যখন সরিয়ে নিচ্ছিলে, তখন যেনো তুমি তার ভোজন-রশিকতা, সেই সাথে বিগত বছরগুলোতে আমাদের আনন্দের সাথে খাওয়ার স্মৃতিগুলো যেনো মুঝে যাচ্ছিলো।

আমি কিন্তু তোমাকে ইতস্তত করার জন্য এসব বলছি না। তুমি শুধু তোমার কাজ করেছো- যেটা আমি দেখছি। আমি আসলে তোমাকে ধন্যবাদ জানাতেই চিঠিটি লিখেছি। আমার স্ত্রীর এমন ছবি দেখে আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি যে- সে যেভাবেই আছে সেভাবেই আমি যে তাকে কতোটা ভালোবাসি, আদর করি- এটা তাকে বলা হয় নি। বার বার না শোনার কারনে সে আশ্বস্ত হতে পারেনি; তাই, ‘আমি তাকে এই ছবিগুলোর মতো হয়ত দেখতে চাই’- এমন ধারণায় সে আমাকে খুশি করার জন্য নিজের ছবি তুলে ফটোশপ করিয়েছে। আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। আমাকে উত্তম কিছু করতে হবে। বাকি জীবনটা তার অসম্পূর্ণতাসহ তাকে বরণ করে নিতে চাই। ভিক্টোরিয়া- এসব আমাকে মনে করিয়ে দেয়ার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ”।

ভিক্টোরিয়া সেই দম্পত্তির পরিচয় গোপন রেখেছেন। তবে এই চিঠিটা অনলাইনে পোষ্ট করার জন্য সান অ্যানটোনিও এক্সপ্রেস – (যেখানে গিয়ে স্ত্রী ছবি তুলেছে) -তার অনুমতি নিয়েছেন কারণ তিনি মনে করেন- এটা মূলত খোদ নারীদেরকেই ব্যক্তি সচেতনতা তথা নিজের শরীরকে যেভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে সেই সৃষ্টিকে সম্মান করার ক্ষেত্রে উৎসাহ দিবে।
Source: http://www.washingtonpost.com/rweb/wildcard/husband-to-photographer-who-airbrushed-wife-you-took-away-everything-that-makes-up-our-life/2015/10/16/e9b9429e3ff5c1c5987bb1c89fd308e4_story.html.

Translated by- ফাতেমা মাহফুজ

Visits: 1

মন্তব্য
Loading...
//thefacux.com/4/4139233