এতো কষ্ট রাখি কোথায়…….

0 ৮৪

কিশোর রাজনের চোখে বাঁধভাঙা জল। চোখ মুখ ফুলে গেছে। প্রহারে প্রহারে ক্লান্ত। শরীর ক্ষতবিক্ষত। একটা খুঁটিতে পিছমোড়া করে বাঁধা সে বারবার করজোড়ে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছে। বলছে, সে চোর নয়। তারপরও উৎসাহী জনতা তাদের ‘বীরত্ব’ ফলিয়েছে চোর সন্দেহে ধৃত নিরীহ কিশোরটির ওপর। কিশোরটি ধীরে ধীরে নিস্তেজ হতে হতে সামান্য পানি খেতে চেয়েছিল। দৃষ্কৃতকারীরা তাকে বলেছে, ‘পানি নাই, ঘাম খা’। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া অবধি খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারা হয়েছে তাকে। আর প্রচণ্ড উল্লাসে সেই বর্বর ঘটনার ভিডিও করেছে তারা। যেন নির্মমতা ছুঁড়ে দেয় সভ্যতাকে, সভ্য মানুষের বিবেককে…….

গত বুধবার সিলেট শহরতলীর কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঘটে যাওয়া এ ঘটনা জানাজানি হয়েছে গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে….

রাজনের পুরো নাম শেখ সামিউল আলম রাজন। বাড়ি সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামে। রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান পেশায় মাইক্রোবাস চালক। তার দুই ছেলের মধ্যে রাজন বড়। অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা রাজন সবজি বিক্রি করে বাবাকে সাহায্য করতো। আর সবজি বিক্রির টাকা দিয়েই চলতো রাজনের পরিবারের খরচ।

বুধবার ভোরে সে সবজি বিক্রি করতে বাড়ি থেকে বের হয়। শহরতলীর কুমারগাঁও এলাকায় আসার পর চোর সন্দেহে তাকে আটক করে স্থানীয়রা। কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকার বড়গাঁও সুন্দর আলী ও গাজী লালাই মিয়া মার্কেট সংলগ্ন স্থানে তাকে একটি খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে টানা আধাঘণ্টা ধরে মারধর করে তারা। পিটুনিতে মারা যায় রাজন। রাজন মারা গেছে বুঝতে পেরে তার লাশ গুমের চেষ্টা চালায় তারা। লাশ গুমের চেষ্টাকালে মুহিত আলম নামে একজনকে স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশে দেয়। পুলিশ ওইদিন দুপরের দিকে রাজনের লাশ উদ্ধার করে……

কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে…..মানুষরুপী এই জানোয়ার গুলো কি অমানুষই থেকে যাবে…..????

 

Visits: 3

মন্তব্য
Loading...
//offmantiner.com/4/4139233