যত্রতত্র থুথু, পানের পিক

0 ৯৭

আসলেই বুঝি না! এদেশের অধিকাংশ মানুষের গলায় কি আলাদা একটা থুথু গ্ল্যান্ড আছে নি?! যেকারণে যত্রতত্র ‘ওয়াক থু’ করার স্বভাব?! হাঁটতে, বসতে, যানবাহনে যাইতে, এমনকি নিজ বাসা থেকে পাশের বাসায় চলে থুথু নিক্ষেপ! আচ্ছা, এই থুথু যে কারো গায়ে লাগতে পারে- এই দিকে কি কারো খেয়াল আছে? নৈতিকতার কথা আর কি বলি; যেখানে বিবেক মৃত!

হ্যা, এটা স্বাভাবিক বলা যায় যে, রাস্তায় থাকতে মুখে কিছু গিয়েছে বা প্রয়োজনে থুথু ফেলতে হচ্ছে- তাহলে না হয় ড্রেনের পাশে বা ডাস্টবিনের সামনে ফেলা যায়। কিন্তু এখানে তো দেখছি মানুষের যেনো অভ্যাস হয়ে গেছে! বার বার মুখে থুথু জমিয়ে একটু পর পর ফেলা।

4-man-spit-thm

এদিকে কথা শুধু থুথু’র নয় বরং টুথপেস্টের ফেনা ও পানের পিক নিয়েও। সাধারণত ভদ্রতা হলো সকালে উঠে বেসিনের কাছে হোক কিংবা যেখানে পানির কল রয়েছে সেখানে গিয়ে দাঁত ব্রাশ করে মুখ ধুয়ে আসা, তবে কিছু লোক- এনারা হয়ত নিজেরাই নিজেদের সম্মান করতে যানেন না। ঝুটা মুখ দেখিয়ে সকাল সকাল বারান্দায় দাঁড়িয়ে ব্রাশ করেন আর রাস্তা দেখেন! কি অবাক কান্ড! আর কেউ কেউ পান খেয়ে পানের পিক সোজা জানালা দিয়ে রাস্তার গলিতে ফেলেন। আর তাদের এমন যত্রতত্র থুথু-পিক ফালানোর ফলে যারা বেগতিক অবস্থায় পড়েন, তারাই বুঝেন কষ্টটা কেমন…

কয়েকদিন আগে আমার এক আত্মীয় পার্টিতে যাওয়ার জন্য দামী পাঞ্জাবি পরে আসছিলেনই… রাস্তায় কে বা কার বাসার ওপর থেকে পানের পিক ফেলা হয়। যেটার দাগ ধোয়ার পরও তৎক্ষণাৎ যায় নি। ফলে উনার মুড অফ হয়ে যায়, পুনরায় শাখের জামা ফেলে আরেক জামা পড়তে উল্টো বাড়ি যেতে হয়…

সুতরাং, কথা হলো- নিজের ঘর, নিজ এলাকা, নিজ দেশ এমনকি বিদেশ- যেখানেই আমাদের পদচারণা হবে- সেখানকার পরিবেশ আমরা সুন্দর করবো, নোংরা করবো না। আমি ‘বিদেশ’ উল্লেখ করার পিছনে আরেকটা কারণ হলো- এক বাংলাদেশী দম্পতি হজ শেষে দেশে ফিরে বলেন- “সেখানে যতগুলো ক্যাম্প আছে, তার মধ্যে বাঙ্গালিদের ক্যাম্প সবচেয়ে নোংরা, যত্রতত্র আবর্জনা ফেলা আর দূর্গন্ধযুক্ত”! কি বুঝলেন?

সবশেষে বলবো- নিজ থেকে সচেতনতাও অনেক বড় কাজ করে। এটা ঠিক সরকারি কর্মকর্তাদের গাফলতির কারণে এলাকা নিয়মিত পরিষ্কার হয় না, কিন্তু যখন দেখি দেশের জনগনই দেশের সমস্ত জায়গাকে ডাস্টবিন ভেবে রেখেছে, যেখানে সেখানে আবর্জনা, থুথু, পানের পিক, এমনকি গৃহস্থলির আবর্জনা ড্রেনে নিক্ষেপ- ইত্যাদি কাজ দেখে মনে প্রশ্ন জাগে- শুধু কর্মকর্তারা ঠিক মতো কাজ করলে কি দেশ পরিষ্কার থাকতো? দুই দিক তো ভালো হওয়া লাগবে। সুতরাং, শপথ নিতে হবে পবিত্র থাকার, পবিত্র অভ্যাস গড়ার ও পরিবেশ পবিত্র রাখার।

“আল্লাহ তোমাদের উপর সংকীর্ণতা চাপিয়ে দিতে চান না, তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান আর তোমাদের প্রতি নি’য়ামত পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো” (সূরা মায়িদা, আয়াতঃ ৬)

Visits: 14

মন্তব্য
Loading...
//staltoumoaze.com/4/4139233