তোমরা যারা মাথার বদলে ব্রেইনে হিজাব পরাতে চাও

0 ৩৭৩

আমি ভেবে পাই না – মেয়েদের কর্মসংস্থান এবং এডুকেশনকে কেন কিছু মানুষ পর্দা প্রথার সাথে গুলিয়ে ফেলে? মেয়েদের মাথায় হিজাব পরানোর সাথে সাথে কেন তারা ব্রেইনেও হিজাব পরাতে চায়? এই ব্যাপারে তাদের মনোভাব বুঝতে একবার একজনের একটা ব্লগ পোষ্ট পড়েছিলাম। তিনি লিখেছিলেন ” স্বয়ং আল্লাহ পাক মেয়েদের এই গুণটা কম দিয়েছেন। তিনি মেয়েদের ব্রেইনকে ছেলেদের তুলনায় ছোট করে বানিয়েছেন।”

জ্বি যারা মেয়েদের ব্রেইনকে ঢাকতে আসেন তাদের জানার দৌড় এতটুকুই। আমি ঠিক এই মানসিকতার লোকদের বলতে চাই- সাইজ দিয়ে যদি বুদ্ধিমত্তার বিচার করা যেত তাহলে হাতি আর জিরাফের দল জগত শাসন করতো। এবার মেডিকেল সাইন্সে আসি। সাইন্স বলে মেয়েদের ব্রেইনের সাইজ ছোট হলেও নিউরন সংখ্যা ছেলে মেয়ে উভয়ের সমান। ছেলে -মেয়ে সবাই সমান ব্রেইন পাওয়ার পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করেছে। হ্যা ব্রেইন স্ট্রাক্চার অনুযায়ী কিছু কাজ করার পাওয়ার ছেলেদের বেশি,মেয়েদের কিছুটা কম। আবার কিছু কাজ করার পাওয়ার মেয়েদের বেশি,ছেলেদের কিছুটা কম। তবে কোন গুণ কারো মধ্যেই একেবারে অনুপস্থিত না। তাই ব্রেইনের পাওয়ারের দিক থেকে কাউকেই পিছিয়ে রাখার সুযোগ নেই। আর মেয়েদের মস্তিষ্কের পাওয়ার যদি কোন কাজেই না লাগত তাহলে আল্লাহ পাক ওটা অযথা দিতেনই না।

যারা মেয়েদের শুধুমাত্র ঘরে বসে থাকার যুক্তি দেন-আমার মনে হয় তারা হযরত আয়েশা(রা:) এর সময় জন্ম নিলে তাকেও খারাপ উপাধী দিতেন। কেননা তিনি ঘোড়ার পিঠে চড়ে যুদ্ধের লিড পর্যন্ত দিয়েছিলেন। আবার এমন অনেকে আছেন যারা কেবল মুখের কথায় নারীকে আসমানে তোলেন কিন্তু তাদের কাজে তার প্রতিফলন ঘটে না। স্ত্রীর পর্দা নষ্ট হবে বলে এক ব্যক্তি তার বাসায় নার্স দিয়ে বাচ্চা জন্ম দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। পরে ঐ বাচ্চা শ্বাস নিতে না পেরে মারা গেছে। মাও প্রেগন্সিজনিত জটিলতায় অনেক কষ্ট পেয়েছে। এখন ঐ মাকে না হয় নিজের মনগড়া ফতোয়া দিয়ে বুঝালেন “দুনিয়ায় কষ্ট পেলেও আখিরাতে এর ভালো ফল পাবা” ,ঐবাচ্চাটা কিন্তু কিয়ামতের দিন আল্লাহ পাকের কাছে বিচার দিবে,”আল্লাহ পাক, আমার বাপের গোড়ামীর জন্য আমাকে সেবা দেয়ার জন্য কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় নাই। আমি নিশ্বাস না নিতে পেরে মারা গেছি।”

ঠিক এই সব গোড়ামীই একদম আনএডুকেডেট গরীব শ্রেণীকে দিয়ে কন্যা সন্তান কবর দেয়ার মত অপরাধের দিকে টানছে। কারণ ফাঁকা বুলিতে চিড়ে ভিজে না। মানুষ কাজে প্রমাণ চায়। মহানবী(সা:) আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগের নষ্ট সমাজ থেকে নারীকে তথা পুরো মানব সমাজকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। তাই মানুষ দলে দলে ইসলামের পথে এসে ছিল। এখন নিজেদের মনগড়া ফতোয়া দিয়ে যদি অবরুদ্ধ করতে চান বিদ্রোহের ঢেউ উঠাই স্বাভাবিক। তখন আবার ইসলাম গেল, ইসলাম গেল বলে কলোরব করবেন। কিন্তু লাভ কিছুই হবে না তাতে। যেই সব মেয়ে “পতিতাবৃত্তি”তে যুক্ত ,অন্য ভালো ন্যায়সম্মত কাজ তাদের দিতে পারলে সমাজ থেকে এই নোংরাশব্দটা চিরকালের মত মুছে ফেলা সম্ভব। আর সমাজকে এইডস,সিফিলিস,গনোনিয়ার,হেপাটাইটিস,সারভাইকাল ক্যানসারের মত রোগ থেকে মুক্তি দেয়া সম্ভব। আর যারা ৪টা বিয়ে করে এই নোংরা প্রথা মুছতে চান তাদের বলছি- পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষের একটা বউ খাওনোর মুরদ নাই,আর চার টা অনেক দুরের হিসাব।

Visits: 0

মন্তব্য
Loading...
//chourdain.com/4/4139233