আংগুর ফল টক
আংগুর ফল টকের গল্প কম-বেশি আমরা সবাই জানি ।ঐ যে এক শিয়াল …….এক আংগুর গাছের নীচ দিয়ে যাচ্ছিল । গাছে থোকা থোকা আংগুর দেখে তার আংগুর খেতে খুব ইচ্ছা হল। সে আংগুর খাওয়ার জন্য খুবই লাফা লাফি করতে লাগল…….।কিন্তু আংগুর ছিল তার নাগালের বাইরে ।সে অনেকক্ষণ যাবত্ লাফা লাফি করে অবশেষে হাল ছেড়ে দিয়ে ফিরতি রাস্তা ধরল। আর বলতে লাগল
……..আংগুর ফল টক !!!
মনুষ্য জাতির মধ্যে ও আজকাল এই ধরনের শিয়ালের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে …..।যারা কোন কিছু পাওয়ার জন্য খুব চেষ্টা করে ………কিন্তু শেষ পর্যন্ত পায় না তখন যে জিনিস টি পায়নি ……..তার গোষ্ঠী উদ্ধার করা শুরু করে ।
যেমন….. বিশ্ব বিদ্যালয়ে অনার্স পড়ুয়া এক ছাত্র ……যে কিনা ক্লাসে ফাসর্ট হওয়ার জন্য খুব পড়াশোনা করে কিন্তু আরেক জনের সাথে সে কিছুতেই পেরে উঠে না ।শেষে সে বলতে থাকে ” আরে!! ওর কথা আর বলিসনা!! ও তো একটা গাধা!! সারা দিন পড়া ছাড়া আর কিছুই বুঝে না ……”।(সে যে কেমন গাধা এটা কিন্তু ও ঠিকই টের পেয়েছে )।”আরে কি হবে ? ডিপার্টমেন্টে ফাসর্ট হয়ে …….?? এমন ……সেমন…….অনেক কিছু ।।এইতো গেল একজনের কথা।।
আরেকটি ঘটনা এমন— দুই জন মহিলার পথের মধ্যে দেখা …..। দুই জনের Husband ই Banker ,তবে প্রথম জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা বড় জোড় (সনদেহ) ইনটার মিডিয়েট পাশ, দ্বিতীয় জন একটি প্রথম সারির পাবলিক বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে বেশ ভালো রেজাল্টের অধিকারী ।প্রথম জন: “ভাবী!! শুনলাম চাকরি টা নাকি ছেড়ে দিছেন….।দ্বিতীয় জন ” হাঁ ভাবী !!বাচ্চা ছোট …….কষ্ট হয়ে যায় …..জানেন ই তো আমার দুই কুলের (মা বা শাশুড়ি )কেউ আমার কাছে থাকার মতো নেই……গ্রাম থেকে আনা মহিলারা শহরের বদ্ধ পরিবেশে থাকতে চায়না…..ছুটা বুয়ার কাছে রেখে কি আর চাকরি করা যায় ????
প্রথম জন ” ভাবী !! আর বইলেন না !! এই জন্য ই তো আমি চাকরি বাকরির কোন ধান্দা ই করিনা……।।
প্রথম জন কিন্তু দ্বিতীয় জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে বেশ ভালোভাবে ই অবহিত…….তারপরও এই কথাটা সে বলল………এখন দ্বিতীয় ভাবী হাসবে না কাঁদবে ……..বুঝতে না পেরে দ্রুত হেঁটে সরে গেল ।
আরেকটি ঘটনা হল …….. বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে পাশ করে বের হওয়ার সাথে সাথে এলাকার এক কলেজে ঢুকে পড়ে মাহতাব নামে একটি ছেলে । তারপর তার এক ভাল বেসরকারি বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে চাকরির অফার আসে । সে যখন এই কথাটি তার অন্য কলিগদের জানায় তখন কিছু শিক্ষক রা বলতে শুরু করল………বেসরকারি বিশ্ব বিদ্যালয়ের চাকরি কোন চাকরি ই না……….এর চেয়ে কলেজের চাকরি হাজার গুণে ভাল ………..।এভাবে ওরা বিভিন্ন কথা বলতেই ……….থাকল………….
। অথচ ওদের কারো বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়ানোর মতো রেজাল্ট ই নেই ।সে ভাল করেই জানে যদি ওদের এমন সুযোগ আসত ……কখনোই
ওরা হাত ছাড়া করত না ।এভাবেই এই মানুষ রুপী শিয়াল গুলো অন্যদের হেনস্থা করে থাকে ।
দেখা গিয়েছে ……..দুই বন্ধু ই বিসিএসের জন্য চেষ্টা করেছে একজনের হয়েছে অন্য জনের হয়নি ।যার হয়েছে তার হওয়ার পিছনে যুক্তিযুক্ত কারণ ও আছে …… সে বেশি কেয়ার ফুল ছিল ……সে system follow করে পড়েছে যার জন্য সে টিকেছে……..। কিন্তু অন্য জন বন্ধুর রেজাল্ট শুনার সাথে সাথে বলল……..আরে সরকারি চাকরি কেডা করে???? এই চাকরি তে glamour বইলা কিছু আছে নাকি…..??বেসরকারি চাকরি করমু …….আর ভাব নিয়া ঘুইরা বেড়ামু……..।মজা ই আলাদা ……….।
এই যে উপরের ঘটনা গুলো এগুলো আমাদের মানসিক দৈনতা ছাড়া আর কিছু ই না ।আমি পারছিনা …….তাই বলে আমাদের পাশে যে কিছু করতে পারছে …..তার credit কেন আমরা দিবনা????
আমাদের যে সব freind রা ভাল কিছু করছে অবশ্যই তাদের আমাদের Appreciate করা উচিত ।মন থেকে বলা উচিত ” yes friend! You are great !!
কিন্তু উল্টো দিকে দেখা যাচ্ছে আমাদের সমাজে এই ধরনের লোকের সংখ্যা ই বেড়ে চলেছে ……….।যারা নিজেদের চেয়ে অন্যদের অগ্রসর দেখলে সহ্য করতে পারেনা ………আর তার পিছনে তখন উঠে পড়ে লাগে …….যে কোন্ দূরবল সাইড গুলো তার মধ্যে আছে এবং সেই দূরবল দিক ধরে কীভাবে কতটুকু তাকে ছোট করা যায় ………..।আক্ষেপের বিষয় হল বর্তমানে আমাদের সমাজে এই ধরনের শিয়ালের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে ই চলছে ………. যারা আংগুর ফলকে সর্বদা টক ই বলে কখনও মিষ্টি বলে না……….।দুঃখের কথা হল আমরা এ—ত এ—ত পড়াশোনা করে ও যদি মানুষ না হয়ে শিয়াল হই তাহলে মনুষ্য সমাজে না থেকে জংগলে গিয়ে থাকাই উত্তম ।।।।
Visits: 7