অভিযোগ শুনে হাসি পায়…

0 ১০২

পৃথিবীর সকল মা-বাবা মনে করেন- উনারা আর সব মা-বাবা থেকে অনেক ভালো। উনারা নিজের সন্তানদের ব্যাপারে অনেক সচেতন। তারা সুষ্ঠভাবে লালন-পালন করেন, তাই উনারা ভাবেন- উনাদের সন্তানরাও সবচেয়ে ভালো ও উত্তম হবে। শুধু তাই নয়- উনারা এমনও বিশ্বাস নিয়ে থাকেন যে- আমাদের সন্তান কখনো ভুল করতেই পারে না। এটা নিয়ে তাদের গর্ব!

তবে, কখনো সন্তান থেকে বিরূপ আচরণ পেলে অভিযোগের সুরে বলে উঠেন- “এতো ভালো মা-বাবা পেয়ে যখন সন্তানরা ভালো হইতে পারলো না, তাইলে খারাপ মা-বাবার ঘরে কি হইবো”?

উনাদের এমন অভিযোগ ও লালন-পালনের পদ্ধতি প্রসঙ্গে কিছু বলার আগে, হ্যা, এটা স্বীকার করি- অনেক পরিবারে আদব-কায়দা, শিষ্ঠাচার দেয়ার পরও সন্তানরা বড় হয়ে নষ্ট হয়। কিন্তু তারপরও সমাজের মা-বাবাদের পেরেন্টিং নিয়ে কিছু অভিযোগ না করে পারছি না; যেখানে-

কিছু কিছু মা-বাবা আছেন- ছোটবেলা থেকেই সন্তানদের এতো দাপটের মধ্যে রাখেন যে, তাদের মধ্যে মা-বাবার দিক থেকে ভয় ঢুকে যায়। এই টাইপের মা-বাবারা খাবার-দাবার অন্যান্য মৌলিক চাহিদা দিতে কার্পণ্য করেন না তবে-সন্তানদের বন্ধু হতে পারেন না। যার ফলে, সন্তানেরা নিজের ইচ্ছা-অনিচ্ছার বিষয়গুলো মুখ ফুটে বলতে পারে না। একপর্যায়ে নিজেদের নিঃসঙ্গ মনে করে। যে জিনিসটা পরবর্তীতে মা-বাবার প্রতি সন্তানদের অন্তরে অবজ্ঞা, রাগ ও ক্ষোভের জন্ম দেয়। যেটা মূলত মা-বাবার জন্যই খারাপ হয়।

দ্বিতীয়, কিছু মা-বাবা আছেন- যারা আদর করতে গিয়ে অনেক সময় সীমা অতিক্রম করে বসেন। সন্তান যা আবদার করে সেটাই হাজির করতে এতোটাই দিশেহারা হয়ে যান যে- পরবর্তীতে সন্তানদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। এই টাইপের মা-বাবারা এটা ভুলেই যান যে- অনেক সময় সন্তানদের শিষ্ঠাচার, পরিবেশ ও আদব কায়দার জ্ঞান দিতে শাসনেরও প্রয়োজন আছে।

তৃতীয়ত, এই টাইপের মা-বাবারা সন্তান জন্ম, অতঃপর তাদেরকে দিয়ে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে নিলেই মনে করেন- “কেল্লা ফতেহ”! ছোটবেলা থেকে সন্তানদের কুরআন শিক্ষা কিংবা অন্য ধর্মের হয়ে থাকলে সেই ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষা দেয়ার কথা ভাবেন না। কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে যখন সন্তানদের কাছে পান না তখন হয় সময়ের দোষ দেন অথবা ভাগ্যের। যদিও ভুলটা উনারা আগেই করেছেন।

চতুর্থত, এই টাইপের মা-বাবারা সন্তানদের ব্যাপারে এতোটাই উদাসীন যে, ছোট শিশুরা যে অনুকরণ প্রিয়- এই কথাটাও ভুলে যান। সন্তানদের সামনে বড়দের নাটক, অশ্লীল নৃত্য, অশ্লীল গান- এসব দেখতে উনারা দ্বিধা করেন না। বরং উনাদের কথা- “বাচ্চা মানুষ, কি বুঝে”? আসলে ছোটবেলা থেকেই যে ওদের ব্রেনে- এসব কুকর্ম ইনপুট হচ্ছে, যার আউটপুট হয়তো- আগামীতেই; সেই চিন্তা অভিভাবকদের নেই।

যাই হোক, এভাবে হয়তো অনেক সমস্যার কথা লিখে দেয়া যাবে, তবে সন্তানদের সুষ্ঠভাবে লালন-পালনের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের গাফলতি দেখে যখন এসব মা-বাবাদের মুখ থেকেই “আমার সন্তান অবাধ্য, ঝগড়াটে, মুখের উপর কথা বলে, উগ্র- ইত্যাদি কথা শোনা যায় তখন উনাদের অভিযোগ শুনে হাসি পায়। ভুলটা যে ছোটবেলা থেকেই করেছেন…

Visits: 0

মন্তব্য
Loading...
//gleeglis.net/4/4139233