শক্তিশালী ভূমিকম্পে জীবন রক্ষা করার পদ্ধতি

0 ১০৫

কোন প্রাকৃতিব ধ্বংস দেশের সভ্যতা বিনাশ করে দেয়। কোন দেশের মিউজিয়াম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল যখন কোন কারনে ধ্বসে যায় তার ক্ষতি যে কতোটা মর্মপর্শী নিদারুন কস্টের তা কিছুতেই পূনরূদ্ধার হয়ে উঠে না। এখানে ভুমিকম্পনের কথা বলা হলে বলতে হয় আমাদের দেশে উদাহরণ কম নেই। তবে কিভাবে তা থেকে জান-মাল রক্ষা করা যায়? আসলে কম্পনের মাত্রা তো অনেক কম থেকে ব্যপক বেশী হতে পারে। তেমন করে তো আর কোন স্থপতি কোন দালান করতে গেলে দেখা যাবে যে পরিমান অর্থের যোগান দিওত হবে হবে নির্মাণের মালিক পক্ষ হয়তো তা করতে চাইবেন না। কোন দেশের সরকারী অফিস বা হাসপাতাল যে ভাবে নিরাপদ নকশা করা হয় বসবাসের জন্যে তা শতকরা বেশ কমে নির্মিত হয়। ছোটবেলায় যখন দেখতাম সরকারী কলনির হলুদ রংগের বাড়ীগুলো মোটামোটা দেয়াল, তখন এর অর্থ খুঁজে পেতাম না। তবে এখন কিছুটা ভেতর ও বাহির বুঝতে পারি।
প্রতি বছর সমগ্র বিশ্বে প্রায় ১০০,০০০ মানুষ ভুমিকম্পনের ঝুঁকিতে আছে। মৃত্যুর সংখ্যা এবং অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ভর করে সে এলাকার ভুমি ঝাকুনির প্রকোটতা এবং সে বিল্ডিং সহ্য ক্ষমতার উপর। বর্তমানের প্রফেশনাল স্থপতিরা তাদের বৈজ্ঞানির নির্ভর গবেষনায় ভুমিকম্পনের তান্ডব নিয়ত্রণে আনতে সফলতা পেয়েছে। তবে উঁচু দালানের ক্ষেত্রে এধরনের সহনশীল নকশা এবং নির্মাণ খরচ নির্ভর করে সে এলাকার বা দেশের মালামালের প্রাপ্তির উপরে। এধরনের নকশাতে নির্মাণ খরচ বেশ বেড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে ঠিক কতো মাত্রা কম্পন আদর্শমান ধরে স্থপতি কাজ করবে তা নির্ভর করে সে দেশের আগের ইতিহাসে ঠিক কতো বেশী ছিলো আর হতে পারে। আবার টেকটনিক প্রেটের উপর তার উপরের ভারসাম্য নির্ভর করে।
বল্ডিংকোড প্রকৌশলী এবং স্থপতিদের স্বাভাবিক মানতে বধ্য করা হলেও অণ্যানা ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার রয়েছে। যেমন পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ত্রণ, রিয়েলস্টেড/ ডেভলপার, ঠিকাদার, নির্মাণ মালামাল প্রস্তুত কারক , ট্যানানী এবং এধরনের অনেক কিছু। বিভিন্ন দেশের পরিবেশ , ভুমি প্রকুতি ভিত্তিতে দিনেদিনে নানান উন্নত গবেষনাধর্মী কোড প্রদান করা হয়েছে।
এখন আশানূরূপ নিরাপত্তার জন্য একজন স্থপতি কিকি বিবেচনা করে কাজে হাত দিবে? কিছু কিছু ধারা নকশা তৈরীতে আগেথেকে মতভাগ নিশ্চিত হতে হয়,সেগুলো হলো:-
১) ফাউন্ডেশন স্ট্যাবল হতে হবে,
২) বলের সহনশীলতা গ্রহনের ক্ষমতা,
৩) প্রচুর নমনীয় এবং সহনশীল নকশা,
৪) ভঙ্গুর এং স্থিরতা ধর্মীয় মালামাল,
৫) এবরো থেবরো হয়ে যওয়ার ব্যপারগুলো।
-এ রিসার্চ গুলো বের হয়ে এসেছে এন.ই.এইচ.আর.পি. কর্তৃক গবেষনার ফলে। যেখানে ভুমিকম্পনের প্রকোটতা বেশী সেখানে বিষয় গুলো ছারাও আরও কিছু বিবেচনায় আনতে হয়। আবার কম ঝুকি পূর্ণ এলাকাতে কিছুটা শীথিল যোগ্য।
আমরা স্থপতির ভাষায় স্ট্যাবল ফাউন্ডেশন বলতে বুঝি দালানের ভার নিয়ে ভুমির ভেতরে ফাউন্ডেশনের নড়াচড়া না করা। সহজ ভাষায় বলা হলো। ভালোমানের ফাউন্ডেশন দারানের ভর এবং মাটির সাথে তার দাড়িয়ে থাকা ভুমিকম্পনের সময় ঠিকিয়ে রাখে। আর অনেক ধরনের ফাইন্ডেশন আছে । কোনটা কোথায় ব্যবহার হবে তা নির্ধারণ করবেন মাটির প্রকৃতির উপরে করে স্থপতি যিনি থাকবেন।
ফাউন্ডেশন, বিম, কলাম এবং ছাদ একে সাতে একটা বিশেষ নিয়মে যুক্ত করা থাকে রযনো সমগ্র ভর মাটিতে দিয়ে দেয়। তাই অধিক কম্পনের সহনসীরতার জন্যে সেগুলোর নকশা তেমন ভাবে করতে হয়। তার অর্থ এই না যে, কোন কলামে দুটো রডের যায়গাতে তিনটি দিয়ে ঢালাই করা। কোথায় কি বাবে রড বাড়িয়ে দিতে হবে তা সে এলাকা এবং দারানের প্রকৃতির উপন এনালাইসিস করে নিতে হবে। আর দেয়ারের সাথে এর সংযুক্তি ভালো না হলে সামান্য কম্পনই ফাঁটল আসতে পারে যা ভয়ের ব্যপার।
নির্মাণের সময় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ দু ধরনের বিম-কলামের কথা বলা আছে। একটি হলো ফ্লাটপ্রেট এবং অপরটি বিমকলাম নকশা। তবে অধিক উঁচু তোলার দালানের জন্য দ্বিতীয় নিয়মটি যুক্তিযুক্ত। অবশ্য এতে নিমার্ণ সামগ্রী বেশী লাগে বলে অনেক ক্ষেত্রে ঠিকাদার প্রথমটি করে দায় মুক্ত হতে চায়।
বিমের সংখ্যা, কলামের সংখ্যা এবং সঠিক ভাবে কাস্টিং না করলে বিপদযে কোন সময় আসতে পারে। আমাদের দেশে গেজেটে আধুনিক নিমার্ণের নীতি ও ধারা বলা আছে। সেখানে পাওয়া যাবে রিসার্চ ভিত্তিক মান। যেমন, ভিভিন্ন এলাকার বাতাসের হতি, টেকটনিক জোনাল প্রকৃতি, সেটব্যাক.. ইত্যাদি।
আমাদের দেশে অনেক দেখো যায় একটি কোদাল দিয়ে খোঁয়া , বালু আর সিমেন্ট মিশিয়ে নেয়। কোন সময় না বুঝে তা দিয়ে ঢালাই করা হয়। কিন্তু প্রতিটা একটা আলাদা আলাদা মিনিমাম শক্ত হবার সময় থাকে। আর আগে সেগুলো ব্যবহার করা হয়। আর অবশ্যই ঢালাইয়ের কাজে যাত্রিক মোটরের ব্যবহার ভালো। এবার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । একটা সুন্দর নির্মান শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে সব বিষয়ের উপর নির্ভর করে বা আমাদের দেশে মান হয়না বললেই চলে।
সেগুলো কি?
১। কর্মীদের মজুরীতে অনিয়ম চলে,
২। সঠিক ভাবে সাইট ইঞ্জিনিয়ার না থাকা, সাইট নির্বাচন এবং ভূল নকশা,
৩। কোন রকম প্রস্তুতি ছাড়া হুট হাট করে নির্মান শুরু করা,
৪। আবহাওয়া সম্পর্কে জ্ঞান সীমিত।
-ফলে নির্মাণে মনোযোগ থাকে না।
সকলের পক্ষে নির্মানের সমগ্র জ্ঞান রাখা সম্ভব নয়। তবে সাধারন ব্যাপারে জ্ঞান জমির মালিকদের অবশ্যই রাখা দরকার। তাদের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে টিকে আছে আমাদের দেশে বেঙের ছাতার মত গড়ে উঠা কন্সট্রাকশন অফিস। গড়ছে দালান বানাচ্ছে টাকা । সে সব জায়গায় সঠিক বর্জ নিষ্কাশন কোন ব্যাবস্থা নেই, নেই বশিুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, সামান্য বৃষ্টিতে ঢাকায় বসবাস বন্ধ হয়ে যায়।
আমরা সকলে মিলে দেশটাকে সুন্দও করতে পারি। শুধু দরকার আখলাক আর সুত্যকারের যোগ্যতা বিচারে দায়িত্ব দেবার মনমানষিকতা।

Visits: 1

মন্তব্য
Loading...
//chicoamseque.net/4/4139233